
দলিল-খতিয়ান লাগবে না! আসছে ৩য় প্রজন্মের স্থায়ী নামজারি সিস্টেম
অনলাইন ডেস্ক;
বাংলাদেশের ভূমি প্রশাসনে আসছে এক ঐতিহাসিক পরিবর্তন। দলিল, খতিয়ান বা রেকর্ড নিয়ে দৌড়ঝাঁপের দিন শেষ! সরকার চালু করতে যাচ্ছে “তৃতীয় প্রজন্মের স্থায়ী নামজারি সিস্টেম”, যেখানে জমির মালিকানা যাচাই ও নিবন্ধন সম্পন্ন হবে এক ক্লিকেই—কোনো কাগজপত্রের ঝামেলা ছাড়াই।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই উদ্যোগের ফলে দেশের ভূমি মালিকানা পদ্ধতি স্থায়ীভাবে নির্ধারণ হতে যাচ্ছে। এখন থেকে শুধুমাত্র সরকার নির্ধারিত ডিজিটাল সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিরাই জমির প্রকৃত মালিক হিসেবে বিবেচিত হবেন। অন্য কেউ কোনোভাবেই জমির মালিকানা দাবি করতে পারবে না।
দীর্ঘদিন ধরে জমি মালিকানা প্রমাণে দলিল, খতিয়ান ও দখল—এই তিনটি বিষয়কে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা হতো। কিন্তু একই জমির ওপর একাধিক দলিল বা রেকর্ড থাকায় প্রকৃত মালিক নির্ধারণে জটিলতা তৈরি হতো। নতুন পদ্ধতিতে এই দ্বন্দ্ব ও দুর্নীতির স্থায়ী সমাধান হবে বলে জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
সরকারের একাধিক সূত্র জানায়, এখন থেকে একবার কোনো জমির দলিল রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে তা আর দ্বিতীয়বার বিক্রি করা সম্ভব হবে না। অর্থাৎ, একই জমি নিয়ে আর কেউ নতুন করে দলিল বা নামজারি করতে পারবে না। এতে ভূমি জালিয়াতি, দ্বন্দ্ব, এবং মামলা-মোকদ্দমা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
নতুন ডিজিটাল সিস্টেমে ভূমি ব্যবস্থাপনায় যুক্ত হচ্ছে ১৭টি আধুনিক অ্যাপস, যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি হলো—
১️⃣ নামজারি অ্যাপ
২️⃣ দলিল যাচাই অ্যাপ
৩️⃣ খতিয়ান (রেকর্ড) উত্তোলন অ্যাপ
৪️⃣ ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) অ্যাপ
৫️⃣ জমির ম্যাপ উত্তোলন অ্যাপ
এই অ্যাপগুলো ব্যবহার করে জমির প্রকৃত মালিক সহজেই জানতে পারবেন তার মালিকানায় কোনো সমস্যা বা গড়মিল আছে কিনা। এতে ভূমি অফিসের ঘুরাঘুরি, ঘুষ ও হয়রানির সুযোগ প্রায় শূন্যে নেমে আসবে।
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই ডিজিটাল স্থায়ী নামজারি পদ্ধতি ২০২৬ সালের মধ্যেই দেশের প্রতিটি জেলা ও মৌজায় চালু করা হবে। ইতোমধ্যে ডিজিটালাইজেশন ও অটোমেশন কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।
সরকার বলছে, নামজারি প্রথা অতীতে দুর্নীতির অন্যতম বড় উৎস ছিল। তাই পুরনো পদ্ধতি সম্পূর্ণ বাতিল করে এখন চালু হচ্ছে নতুন স্থায়ী মালিকানা যাচাই সিস্টেম, যা দেশের ভূমি প্রশাসনকে স্বচ্ছ, গতিশীল ও জনবান্ধব করে তুলবে।
👉 অর্থাৎ, দলিল-খতিয়ান নয়—এখন থেকে এক ক্লিকেই জানা যাবে, কে জমির প্রকৃত মালিক!