
সিদ্ধিরগঞ্জে মাইক্রোবাসে তুলে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ! মামলা দায়ের করা হলেও আসামীরা পলাতক!
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি :
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জে এক তরুণীকে মাইক্রোবাসে তুলে নৃশংসভাবে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণী নিজেই বাদী হয়ে শনিবার রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার প্রায় একদিন পার হলেও পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি, যা স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি দশপাইপ এলাকায়। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ভুক্তভোগী তরুণীকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে মাইক্রোবাসে তুলে নেয় অভিযুক্তরা এবং সেখানে তাকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে ফেলে রেখে যায়।
মামলার আসামিরা হলেন—মো. শফিক (২৪), সাইদুল ইসলাম (৫৯), নাজমুল হোসেন (২১), শামসু মিয়া (২৮), ফয়সাল আহমেদ (২৪) ও রাশেদ মিয়া (২২)। এদের সবাই নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা এবং একে অপরের আত্মীয় বা পরিচিত বলে জানা গেছে।
তরুণীর অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৭ সালে তার মা ২০ শতাংশ জমি বন্ধক রেখে আসামি শফিকের কাছ থেকে চার লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। ঋণ শোধের পরও শফিক স্ট্যাম্প ফেরত দিতে অস্বীকার করেন। এই বিষয়টি নিয়ে বছরজুড়ে বিরোধ চলছিল। তরুণীর মা সৌদি আরবে অবস্থান করায় স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিসি বৈঠক হলেও সমাধান হয়নি।
গত শুক্রবার সকালে শফিক ফোন করে জানায়, “স্ট্যাম্প ফেরত দেব, একটু আসো।” তরুণী তার কথায় বিশ্বাস করে দেখা করতে যান। শফিক তখন বলে, স্ট্যাম্পটি তার বোনের বাসায় আছে এবং মাইক্রোবাসে করে সেখানে নিয়ে যাবে। কিন্তু বাসে ওঠার পরপরই গাড়িতে থাকা অন্য আসামিরা তাকে জোর করে আটকে রাখে এবং ধর্ষণ করে। পরে তাকে নির্জন স্থানে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা।
ভুক্তভোগী তরুণী পরে স্থানীয়দের সহায়তায় থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনুর আলম HindusNews-কে জানান, “তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। তাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত চলছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।”
এদিকে এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকেই আসামিরা পলাতক। তারা দাবি করেছেন, দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
নারী নির্যাতন বিরোধী সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দও এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, “নারায়ণগঞ্জে একের পর এক নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। প্রশাসনের শিথিলতা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি না বদলালে এ ধরনের অপরাধ বন্ধ হবে না।”