
অবশেষে সেই গৃহবধূর শখের বদনা ও আংটি ফেরত দিলো এনজিও, বরখাস্ত ২
নিজস্ব প্রতিবেদক, চিতলমারী (বাগেরহাট):
বাগেরহাটের চিতলমারীতে এনজিও ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (ডিএফইডি)-এর কর্মীদের নেওয়া গৃহবধূ শ্রাবণী হীরার শখের বদনা, নাকফুল ও আংটি অবশেষে ফেরত দেওয়া হয়েছে। HindusNews সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর দ্রুত পদক্ষেপ নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
ঘটনার পর বুধবার (১২ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে ডিএফইডির কয়েকজন কর্মকর্তা শ্রাবণী হীরার বাড়িতে গিয়ে তাকে অফিসে নিয়ে যান। সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত দেওয়া হয় তার দুটি বদনা, নাকফুল, আংটি এবং ফাঁকা দুটি স্ট্যাম্প।
গৃহবধূ শ্রাবণী হীরা বলেন,
“গণমাধ্যমে খবরটি প্রকাশের পর আজ সকালে অফিস থেকে কয়েকজন স্যার এসে সব শুনে আমার জিনিসপত্র ফেরত দেন। আমার শখের বদনা আর আংটি ফেরত পেয়ে এখন একটু শান্তি লাগছে।”
ডিএফইডির নরসিংদী জোনাল ম্যানেজার তৌহিদুল ইসলাম বলেন,
“প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধূ শ্রাবণী হীরার কাছে তার মালামাল ফেরত দিয়েছি। তিনি তার সুবিধামতো কিস্তির টাকা পরিশোধ করবেন।”
তিনি আরও জানান, ঘটনাটির তদন্তে চিতলমারী শাখার ম্যানেজার বাসুদেব দেবনাথ এবং মাঠকর্মী নেওয়াজ শরীফকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এছাড়া, প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার সাহিদুল কবীর তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন, যারা সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
তৌহিদুল ইসলাম বলেন,
“শ্রাবণী হীরা অভাবের কারণে নিজ ইচ্ছায় কিস্তির টাকার পরিবর্তে বদনা, নাকফুল ও আংটি দিয়েছিলেন। পরে তিনি ৯ হাজার ৫০০ টাকা জমা দিয়ে মালামাল ফেরত নিয়েছেন।”
উল্লেখ্য, চিতলমারী শাখা থেকে শ্রাবণী হীরা ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। স্বামী রিপন রায় কাজের জন্য বাইরে চলে যাওয়ার পর কয়েকটি কিস্তি বকেয়া পড়ে যায়। গত ২৯ অক্টোবর এনজিও কর্মীরা তাকে অফিসে ডেকে নিয়ে গিয়ে ফাঁকা দুটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে তার হাতের আংটি, নাকফুল ও পিতলের বদনা নিয়ে নেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এই ঘটনা প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়। শেষ পর্যন্ত গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের ফলেই গৃহবধূ শ্রাবণী হীরা তার প্রিয় জিনিসপত্র ফিরে পান।