
ময়মনসিংহে নৃত্যশিল্পী রূপাকে বেধে নির্যাতন, মাথার চুল কেটে মুখে কালি! থানার পাশেই ঘটলো ভয়াবহ ঘটনা!
HindusNews ডেস্ক :
ময়মনসিংহ শহরের কোতোয়ালী মডেল থানার একেবারে পাশেই নৃত্যশিল্পী রূপা আক্তারকে বেঁধে নির্মমভাবে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়েছে, রূপাকে বেঁধে তার মাথার চুল কেটে ফেলা হয় এবং মুখে কালি মাখিয়ে দেওয়া হয়। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার, ১২ নভেম্বর দুপুরে, শহরের বড়কালীবাড়ি এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রূপা আক্তার একজন প্রশিক্ষিত নৃত্যশিল্পী এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সক্রিয় মুখ। তার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী কালাম মিয়া ও তার সহযোগীদের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। গত বছর ১ অক্টোবর ২০২৪ সালে রূপা আক্তার ওই কালাম মিয়া ও আরও ১২ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি ময়মনসিংহের ১ নম্বর সি আর আমলী আদালতে দায়ের করা হয় (মামলা নং–২২৭১/২৪)। পরে মামলাটি ১৩ অক্টোবর ২০২৪ সালে কোতোয়ালী মডেল থানায় (স্বারক নং–৬০৪) আসে।
প্রথমে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই মোজাম্মেল, কিন্তু তিনি আদালতে কোনো প্রতিবেদন দাখিল করেননি। পরে নতুন করে দায়িত্ব পান এসআই আনিসুর রহমান আনিস। ২০২৫ সালের ১২ নভেম্বর দুপুরে তিনি মামলাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেন এবং থানায় ফিরে আসেন। তদন্তের কিছু সময় পরই কালাম মিয়া গংরা—মাফুজা, আতার আলী, শাহ আলম, ছাবিনা, আকলি, অভি, মাজেদা, আয়শা, মমতা, আকবর, মাহমুদা, সেলিম, সৌরভ ও হৃদয় ওরফে রুহুল— সবাই মিলে রূপার ওপর হামলা চালায়। তারা রূপাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে বেঁধে ফেলে, নির্যাতন চালায়, মাথার চুল কেটে দেয় এবং মুখে কালি মাখিয়ে দেয়।
সংবাদ পেয়ে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনিসুর রহমান ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত রূপাকে উদ্ধার করেন এবং ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রূপা কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলাটির তদন্তভার এসআই মাসুদ জামালী-এর হাতে তুলে দেন।
এসআই মাসুদ জামালী বলেন, “অভিযোগটি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা যাচাই করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে অভিযোগ দায়েরের পর থেকে আসামিপক্ষ রূপা ও তার পরিবারকে বাড়িতে ফিরতে দিচ্ছে না বলে জানা গেছে। পরিবারটি হুমকি ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। রূপার মা বলেন, “মেয়েকে নিয়ে এখন ভয়ে আছি। যারা নির্যাতন করেছে, তারা প্রতিদিন ভয় দেখাচ্ছে।”
রূপা আক্তারের পরিবার জানিয়েছে, মামলার পর থেকেই কালাম মিয়া ও তার সহযোগীরা বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছিলেন। অবশেষে বুধবারের ঘটনায় তারা প্রকাশ্যে প্রতিশোধ নেয়।