
সরস্বতী পূজার দিনেই ভর্তি পরীক্ষা! ক্ষুব্ধ সনাতনী শিক্ষার্থীরা
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি :
সরস্বতী পূজার দিনেই ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতনী শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডারে সরস্বতী পূজার দিন ছুটি ঘোষণা করা থাকলেও সেই দিনই ‘বি ইউনিট’-এর ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা বিষয়টিকে “সচেতন সাম্প্রদায়িক মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ” বলে অভিহিত করেছেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী এই বিশ্ববিদ্যালয় এর আগেও দুর্গাপূজার সময় পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার মাধ্যমে ধর্মীয় সংবেদনশীলতা উপেক্ষা করেছে। এবারের সিদ্ধান্তে আবারও প্রমাণ হলো—প্রশাসন সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি অবহেলা করছে।
একজন সনাতনী শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“রেজিস্ট্রার মহোদয়ের কর্মকাণ্ডে বারবার প্রমাণিত হচ্ছে তিনি মৌলবাদপুষ্ট মানসিকতার অধিকারী। সরস্বতী পূজার দিন ভর্তি পরীক্ষা নির্ধারণ করা কেবল অসচেতনতা নয়, এটি একটি সচেতন সাম্প্রদায়িক আচরণ।”
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে “অসাম্প্রদায়িক চেতনার পরিপন্থী” হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন।
জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নেতারা বলেন,
“একটি গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় উৎসবের দিন সম্মান জানানো প্রশাসনের নৈতিক দায়িত্ব। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যদি এমন বৈষম্য চলতে থাকে, তবে তা শিক্ষাঙ্গনকে বিভক্ত ও উত্তপ্ত করে তুলবে।”
তারা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট দাবি জানিয়েছেন—সরস্বতী পূজার দিনে ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে এবং যিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেই রেজিস্ট্রার মহোদয়ের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনো জানা যায়নি। তবে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না হলে তারা আন্দোলনে নামবেন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, সরস্বতী পূজা শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়—এটি শিক্ষার দেবীর আরাধনা, জ্ঞান ও সংস্কৃতির উৎসব। এমন দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নির্ধারণ করা সনাতনী শিক্ষার্থীদের জন্য গভীর আঘাতের সমান।