
বিহারে এনডিএ জোটের ঐতিহাসিক জয়, পশ্চিমবঙ্গকে লক্ষ্য করে এগোচ্ছে মোদি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারতের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে গেছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের জয়। কংগ্রেস–আরজেডি মহাজোটের তীব্র ভরাডুবির মধ্য দিয়ে এনডিএ দুই শতাধিক আসনে বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ায় রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণ পাল্টে গেছে। নির্বাচনী পূর্বাভাসে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত থাকলেও বাস্তব চিত্র দাঁড়ায় সম্পূর্ণ ভিন্ন জায়গায়—নীতীশ কুমার ও বিজেপির জোট যেন রীতিমতো ভূমিধস টাইপ ফলাফল এনে দিয়েছে।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এই বিজয়ের পর দিল্লির বিজেপি সদর দফতরে কর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উচ্ছ্বাসভরা সেই বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, বিহারের এই রায় শুধু নীতীশ–বিজেপির প্রতি আস্থা পুনর্ব্যক্ত করেনি, বরং পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিজয়ের পথও প্রশস্ত করেছে।
মোদি বলেন, “বিহারের জনতা বিজেপির উন্নয়ন-দৃষ্টিভঙ্গিকে আবারও জয়ী করেছে। এই জয়ের পর আগামী বছরে পশ্চিমবঙ্গেও জঙ্গলরাজের অবসান হবে। বাংলার ভাই-বোনদের আশ্বস্ত করছি—পরিবর্তন এবার নিশ্চিত।”
২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১২২ আসন। এবার এনডিএ পেয়েছে ২০২টি। এর বিপরীতে কংগ্রেস–আরজেডি জোটের ফলাফল অত্যন্ত হতাশাজনক—আরজেডির ঝুলিতে গেছে মাত্র ৩৫টি আসন। বাকি ৬ আসনে জয়ী হয়েছেন অন্যান্য প্রার্থীরা।
৬ ও ১১ নভেম্বর দুই দফায় অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে ভোট পড়েছে প্রায় ৬৭ শতাংশ।
ফল ঘোষণার পর থেকেই বিরোধীরা অভিযোগ তুলছে ভোটার তালিকা সংশোধনকে ঘিরে। নির্বাচনের আগেই ৪৭ লাখের বেশি নাম বাদ পড়ায় মহাজোট দাবি করে—এটি ছিল এনডিএকে সুবিধা দিতে পরিকল্পিত উদ্যোগ। ফল ঘোষণার পর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সরাসরি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ‘বিজেপির হয়ে কাজ করার’ অভিযোগ আনেন।
বিহারের এই জয়ের প্রভাব এখন সরাসরি পড়েছে আগামী বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের ভোটকে ঘিরে। ২৯৩ আসনের বাংলায় নারী নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা, বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ, ভোটার তালিকা সংশোধন—এসব ইস্যুতে ইতোমধ্যেই তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, বিহারের ফল भाजपा’কে নতুন করে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে এবং আগামী নির্বাচনী লড়াই আরও তীব্র হবে।
এদিকে আগামী বছর কেরালা, তামিলনাড়ু, আসাম ও পদুচেরিতেও বিধানসভা নির্বাচন। সবমিলিয়ে বিহারের ফল পুরো ভারতীয় রাজনীতিতে ক্ষমতার পালাবদলের নতুন বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে।