দিপংকর দাশ দ্বীপের মৃত্যুতে হিন্দু - মুসলিম নির্বিশেষে সকলের শোক—ভুয়া প্রচারণায় উত্তেজনা ছড়ানোর অপচেষ্টা!

2 week ago
VIEWS: 185

HindusNews ডেস্ক :

সিলেটের তরুণ দিপংকর দাশ দ্বীপের মৃত্যুতে ফেসবুকজুড়ে দেখা গেছে স্বাভাবিক ও মানবিক প্রতিক্রিয়া। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে বহু মানুষ তার জন্য শোক প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে অসংখ্য মুসলিম তরুণ-তরুণী লিখেছেন, “শোকাহত”, “আল্লাহ উনাকে ভালো রাখুক”, “ইন্নালিল্লাহ”—যা একজন মানুষের মৃত্যুতে সহানুভূতিশীল মানুষের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। মৃত্যু ধর্ম-সম্প্রদায়ের ভেদাভেদ মানে না; একজন মানুষ চলে গেলে শোক প্রকাশ করাই প্রকৃত মানবিকতা।

কিন্তু এই মানবিকতার মাঝেও কিছু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম গ্রুপ ও পেজ পুরো ঘটনাটিকে বিকৃত করার চেষ্টা করেছে। বিশেষ করে Protect Our Sister নামের একটি উগ্রবাদী গ্রুপ দিপংকরকে নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ ছড়াতে শুরু করে। তারা দাবি করে—দিপংকর নাকি ইসরায়েলের সমর্থক, ইসকনের সদস্য, আর তার জন্য শোক প্রকাশ করা নাকি ‘ধর্মের বিরুদ্ধে যাওয়ার শামিল’। অথচ তাদের এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই। বরং দেখা গেছে, দিপংকর দাশ দ্বীপ ছিলেন সিলেটের এক সাধারণ হিন্দু যুবক, যার সঙ্গে রাজনীতি বা কোনো আন্তর্জাতিক ইস্যুর যোগসূত্রের তথ্য পাওয়া যায়নি।

দ্বীপের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের তালিকা দেখলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। তার সবচেয়ে কাছের বন্ধুরা—নুরুল আমিন জনি, রাহি, তাহসান এবং গ্রীন বাংলা গ্রুপের কর্ণধার বেলাল আহমেদ মুরাদ—এরা সবাই পরিচিত মুসলিম পরিবার থেকে উঠে আসা শিক্ষিত তরুণ। তারা দিপংকরের জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ের সাক্ষী ছিলেন। তারা কেউ ইসকন, কেউ ইসরায়েলপন্থী—এমন ধারণা শুধু হাস্যকরই নয়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতও। তাদের শোক প্রকাশ করা ছিল বন্ধুত্বের, সম্পর্কের এবং মানবিকতার জায়গা থেকে।

তাহলে প্রশ্ন একটাই—এমন ভুয়া তথ্য কেন ছড়ানো হচ্ছে? এর উত্তর লুকিয়ে আছে সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টির প্রবণতায়। কিছু গোষ্ঠী আছে যারা ধর্মীয় বিভক্তিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে সমাজে উত্তেজনা তৈরি করতে চায়। তাদের লক্ষ্য শুধু হিন্দু-মুসলিমের মাঝে দূরত্ব তৈরি করা, ভুল বোঝাবুঝি ছড়িয়ে ঘৃণা বাড়ানো। দিপংকরের মৃত্যুকেও তারা সেই ঘৃণা-পুষ্টির কাজে ব্যবহার করতে চাইছে। অথচ একজন মৃত মানুষের প্রতি সহানুভূতি দেখানো কখনোই ধর্মীয় বিচ্যুতি নয়; এটি মানবতার প্রকাশ।

সিলেটের স্থানীয়রা বলছেন, দিপংকর দাশ দ্বীপ ছিলেন শান্ত-স্বভাবের, ভদ্র এবং সবার কাছেই প্রিয় একজন তরুণ। তার মৃত্যুতে যে স্বাভাবিক শোক প্রকাশ হয়েছে, তা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং সমাজের জন্য বিপজ্জনক। মানুষ তার মৃত্যুর পরও যেন শান্তিতে থাকতে পারে না—এটাই সবচেয়ে বেদনার।

মানুষ হয়ে ওঠাটাই প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিচয়। ধর্ম আসে পরে, কিন্তু মানবতা আসে আগে। যারা মিথ্যা ছড়িয়ে বিভাজন তৈরি করে, তারা সমাজের উপকারে নয়—তারা বিভেদ, সন্দেহ আর ঘৃণার বীজ বপন করে। এমন মানুষ ও গোষ্ঠী থেকে দূরে থাকাই সমাজ ও রাষ্ট্রের স্বার্থে জরুরি।

দিপংকরের মৃত্যু আমাদের আবারও মনে করিয়ে দেয়, “সবার উপরে মানুষ সত্য—তাহার উপরে নাই।”
ধর্মান্ধতার নয়, মানবতার পাশে দাঁড়ানোই আমাদের সত্যিকারের পরিচয়।

to join the global Sanatani Hindu Community
Connect with Sanatani Hindus from all over the world — share, learn, and grow together.
Explore Questions, Bhajan Lyrics, Leelas, Feeds, Business Pages, Products, plus Shlokas, Events, Courses, Jobs, Marriage, Help Posts, and more.
মন্তব্য করতে Login অথবা Registration করুন