
পূজাকে ‘শয়তানের ইবাদত’ বলায় বিএনপি নেতা হারুনের মনোনয়ন বাতিলের দাবি পূজা উদযাপন পরিষদের
ঢাকা প্রতিনিধি :
হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করে বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন বিএনপি নেতা ও সাবেক এমপি হারুনুর রশীদ। পূজাকে ‘শয়তানের ইবাদত’ বলে অভিহিত করার ঘটনায় তিনি দেশের সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ, ব্যথা ও বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছেন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি এক যৌথ বিবৃতিতে তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। সংগঠন দুটি বলেছেন, হারুনুর রশীদের এমন বক্তব্য “ধর্ম অবমাননার শামিল” এবং এটি কোনোভাবেই রাজনীতিক বা ব্যক্তিগত মতামতের সীমার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না।
সংগঠন দুটি তার বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাতিল এবং দল থেকে বহিষ্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি সরকারের কাছে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দ্রুত কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যও জোর দাবি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “একই সঙ্গে ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, এমন বক্তব্য প্রদত্ত ব্যক্তি আগামী জাতীয় নির্বাচনে একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন পেয়েছেন, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।”
প্রসঙ্গত, হারুনুর রশীদ গত শনিবার (১৫ নভেম্বর) চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে বিএনপি আয়োজিত গণসমাবেশে এই মন্তব্য করেন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী। হারুনুর রশীদ ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০১৮ সালে সংসদে নির্বাচিত হয়েছেন।
সংগঠনগুলোর অভিযোগ, হারুনুর রশীদ এর আগেও একাধিকবার পূজাকে ‘শয়তানের ইবাদত’ বলে অভিহিত করেছেন। এছাড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অবতার শ্রীকৃষ্ণ ও বিষ্ণুর নাম তাচ্ছিল্যের সঙ্গে উচ্চারণ করার অভিযোগও রয়েছে। ১২ নভেম্বর গোমস্তাপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত একটি গণসমাবেশেও তিনি পূজাকে ‘শয়তানের ইবাদত’ আখ্যা দেন এবং ‘শয়তান তাড়ানোর স্লোগান’ হিসেবে নারায়ে তাকবির উচ্চারণ করেন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব ও সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস চন্দ্র পাল যৌথভাবে বিবৃতিতে সই করেছেন।
সংগঠন দুটি হিন্দু সম্প্রদায়ের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে।