পরীক্ষা ও মানসিক চাপে ভেঙে পড়ে সিলেটে মেডিকেল ছাত্রী প্রিমার আত্মহত্মা! জেনে নিন সম্পূর্ণ ঘটনা:

1 week ago
VIEWS: 641

HindusNews ডেস্ক:

সিলেটে জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী প্রিমা শর্মা (২২) আর নেই—শনিবার সকালে করেরপাড়া এলাকার নিজ বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সকালবেলায় নিজের কক্ষে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পরিবার তাৎক্ষণিকভাবে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মুহূর্তেই পুরো এলাকায় নেমে আসে গভীর শোকের ছায়া।

প্রিমা ছিলেন কলেজের এমবিবিএস ৩০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার; পরিবারেরও ছিল একই প্রত্যাশা। কিন্তু একসময় সেই স্বপ্নের পথই তার জন্য পরিণত হয়েছিল এক অদৃশ্য চাপে—যা থেকে তিনি আর বের হতে পারেননি। জালালাবাদ থানার ওসি মোহাম্মদ মুবাশ্বির জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে পরীক্ষায় খারাপ ফলাফল, একাডেমিক চাপ এবং মানসিক দুশ্চিন্তার কারণেই প্রিমা গভীর হতাশায় ভুগছিলেন। ময়নাতদন্তের পর আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হবে।

এদিকে, প্রিমার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তার শেষ দিকের পোস্টগুলো সবাইকে আরও ব্যথিত করে তুলেছে। পড়ালেখার চাপ, পরিবারের প্রত্যাশা, একাকিত্ব এবং আত্মসমালোচনায় ভরা সেই লেখাগুলো যেন নিঃশব্দে প্রকাশ করছিল—ভেতরে ভেতরে কত বিশাল এক সংগ্রামে লড়ছিলেন তিনি। ছোটবেলা থেকে পড়ালেখাকেই জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে ধরে নেওয়া, খেলাধুলা বা স্বাভাবিক শৈশবের অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত হওয়া, সামাজিকতার অভাব—এসবই ধীরে ধীরে তাকে ক্লান্ত করে তুলেছিল। মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার পর কঠোর রুটিন, সাপ্লি পরীক্ষার চাপ এবং শিক্ষকদের কঠোর মন্তব্যে তিনি আরও ভেঙে পড়ছিলেন।

এক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন—“জীবনের মানে কি? ছোটবেলা থেকে শিখেছি পড়ালেখা ছাড়া কিছুই হয় না… কিন্তু এই চাপ, এই যুদ্ধ কি সত্যিই জীবন?”
তার আরেকটি লেখায় ছিল নিঃসঙ্গতার আক্ষেপ—বন্ধুবিহীন ক্লাস, কারও সাথে মনের কথা বলতে না পারা, আর প্রতিটি ব্যর্থতার সঙ্গে বাড়তে থাকা অস্থিরতা। পরিবারে অনেক ব্যয় হওয়ার কারণে ব্যর্থ হওয়ার ভয় তাকে আরও দুর্বল করে তুলছিল।

প্রিমার মৃত্যুর পর সহপাঠী, শিক্ষক, প্রতিবেশীসহ অনেকে বলছেন—শিক্ষার্থীদের উপর অতিরিক্ত চাপ, ফলাফলের ভয়, সামাজিক ও পারিবারিক প্রত্যাশা—এসব মিলেই একটি নীরব কিন্তু বিষাক্ত পরিবেশ তৈরি হয়, যার ভুক্তভোগী হন অনেক তরুণ-তরুণী। প্রিমার মৃত্যু সেই কঠিন বাস্তবতার নির্মম প্রতিচ্ছবি।

এই ঘটনায় শিক্ষাজগৎ থেকে শুরু করে সামাজিক স্তর পর্যন্ত নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে—শুধুই পড়ালেখা কি জীবনের মানে নির্ধারণ করে? তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব না দিলে এমন ট্র্যাজেডি কি থামবে?

প্রিমার পরিবার এখনো শোকে বাকরুদ্ধ। তাদের একটাই প্রশ্ন—চাপের ভারে ভেঙে পড়া একটা মন কেন সময়মতো সাহায্য পায় না?

প্রিমার অসময়ে বিদায় শুধু একটি পরিবার নয়, পুরো সমাজকে নতুন করে ভাবাচ্ছে—মানসিক স্বাস্থ্য, সহমর্মিতা এবং তরুণ প্রজন্মের উপর চাপ কমানোর বিষয়ে আমরা কতটা সচেতন?

to join the global Sanatani Hindu Community
Connect with Sanatani Hindus from all over the world — share, learn, and grow together.
Explore Questions, Bhajan Lyrics, Leelas, Feeds, Business Pages, Products, plus Shlokas, Events, Courses, Jobs, Marriage, Help Posts, and more.
মন্তব্য করতে Login অথবা Registration করুন