
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার যন্ত্রাইল ইউনিয়নের হরিষকুল গ্রামে তিথি বাড়ৈ (২২) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবী হত্যা!
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় স্বামীর বিদেশে যাওয়ার জন্য দাবিকৃত টাকার জোগান দিতে না পারায় মানসিক চাপে পড়ে তিথি রায় (২২) নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিবারের দাবি, টাকার জন্য স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা নিয়মিত তার ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালাতেন। তিথি মৃত্যুর আগে রেখে গেছেন ১০ মাস বয়সী এক কন্যাসন্তান।
ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, যন্ত্রাইল ইউনিয়নের হরিশকুল গ্রামে। খবর পেয়ে পুলিশ তিথির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা অখিল রায় বাদী হয়ে নবাবগঞ্জ থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে চারজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে তিথির বিয়ে হয় সুশান্ত বাড়ৈ নামের এক যুবকের সঙ্গে। বিয়ের পর সুশান্ত দুবাই প্রবাসী ছিলেন এবং কিছুদিন আগে দেশে ফেরেন। দেশে ফিরে তিনি আবার বিদেশ যাওয়ার পরিকল্পনা করেন এবং এর জন্য তিথির বাবার পরিবারের কাছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ টাকা দাবি করেন। কিন্তু আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় তিথির পরিবার সেই টাকা দিতে অপারগতা জানায়। এর পর থেকেই সুশান্ত ও তার পরিবারের সদস্যরা তিথির ওপর নিয়মিত চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন এবং বিভিন্ন সময় মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তিথি একাধিকবার বাবার বাড়ি চলে এসেছিলেন। কিন্তু সংসার টিকিয়ে রাখার স্বার্থে পরিবার তাকে আবার শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন সকালেও বিদেশযাত্রার টাকা নিয়ে তিথির সঙ্গে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের তীব্র বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তারা তিথির ওপর অকথ্য গালিগালাজ করেন এবং তীব্র মানসিক চাপ সৃষ্টি করেন। এতে তিথি ভীষণ ভেঙে পড়েন। দুপুর দেড়টার দিকে তিথির বাবা অখিল রায় খবর পান যে, তার মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়েছেন। দ্রুত নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় তিথির স্বামী সুশান্ত বাড়ৈ, শ্বশুর যাবদ বাড়ৈ, শাশুড়ি ভালোবাসা বাড়ৈ এবং আগলা ইউনিয়নের টিকরপুর গ্রামের রজন্তি বিশ্বাসকে আসামি করা হয়েছে। নবাবগঞ্জ থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।