
‘ইস্কন সমর্থক’ বলে হিন্দু ব্যক্তিকে নৃশংস মারধর! দীপক রায়ের ন্যায়বিচারের আকুতি
HindusNews ডেস্ক :
চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলায় ধর্মীয় পরিচয়কে কেন্দ্র করে এক হিন্দু যুবককে অমানবিকভাবে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী দীপক রায় নিজের ফেসবুক পোস্টে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে জানিয়েছেন, তিনি পেশাগত কারণে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে হিন্দু ধর্মীয় সামগ্রী বিক্রি করেন। তার বাড়ি মুছাপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে, কামিনী শীল বাড়ি এলাকায়। এনাম নাহার মোড় থানার সামনে তার একটি দোকানও রয়েছে। প্রতিদিনের মতো ১৭ নভেম্বর তিনি কালাপানিয়া নামার বাজার থেকে দক্ষিণ দিকে একটি জেলে পরিবারের বাড়িতে যান ধর্মীয় সামগ্রী নিয়ে।
কিন্তু সেখানে যাওয়ার মাত্র দশ মিনিট পর হঠাৎ দুই যুবক এসে তার পাশে দাঁড়িয়ে তাকে “ইস্কন করিস?”—বলে অপমান করতে শুরু করে। কোনো কথা শোনার সুযোগ না দিয়েই তারা স’মিলের ভারী কাঠ ও কেবড়া গাছের লাকড়ি দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। দীপক চেষ্টা করেও তাদের বোঝাতে পারেননি যে তিনি কোনো ভুল করেননি। তিনি লিখেছেন—মানুষ যেমন কুকুরকেও পেটায় না, তার সঙ্গে তার চেয়েও নৃশংস আচরণ করা হয়েছে। মারধরের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে ব্যথা সহ্য করতে না পেরে তিনি পাশের একটি ঘরের ভেতরে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করলে সেখান থেকেও টেনে বের করে আবারও তাকে নির্যাতন করা হয়।
দীপক রায় অভিযোগ করেছেন, যারা তাকে মারধর করেছে তাদের নাম মো. রাকিবুল হাসান ও শিমুল। আরেকজন যুবক দাঁড়িয়ে পুরো ঘটনাটি ভিডিও করছিল। তারা কালাপানিয়ার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি আরও দাবি করেন, প্রায় তিন সপ্তাহ আগে একই দুই ব্যক্তি এলাকার এক জেলে তরুণকে শুধু হিন্দু ধর্মীয় বই নেওয়ার অপরাধে মারধর করেছিল। দীপকের মতে, এ ধরনের আক্রমণ পরিকল্পিত এবং ধর্মীয় বিদ্বেষপূর্ণ। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেছেন—এই দেশে তারা কি নাগরিক নন? তার মতো সনাতনী হিন্দুরা কি স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করার অধিকার রাখেন না?
তিনি কখনো কারো সঙ্গে এমন আচরণ করেননি, অথচ শুধুমাত্র হিন্দু পরিচয়ের কারণে বারবার এমন ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে।
মারধরের সময় তার নাক, মাথা, পা, কান এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর আঘাত লাগে এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় বলে তিনি জানান। দীপক রায় বিশ্ববাসী ও দেশবাসীর কাছে আবেদন জানিয়ে বলেছেন, তারা যেন স্বাধীনভাবে, নিরাপদে বাংলাদেশে বসবাস করতে পারে এবং বাধাহীনভাবে নিজেদের ধর্ম পালন করতে পারে। সেই সঙ্গে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি করেছেন।