
ক্যাম্পাসে মন্দির স্থাপনের দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিলেন জবি জকসু ভিপি প্রার্থী চন্দন
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি :
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতনী শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক উপাসনালয় হিসেবে ক্যাম্পাসে একটি মন্দির স্থাপনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন জকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র ভিপি পদপ্রার্থী চন্দন কুমার দাস। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটার দিকে তিনি উপাচার্যের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে স্মারকলিপিটি আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার জায়গা হিসেবে সুপরিচিত হলেও বিপুল সংখ্যক সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী থাকা সত্ত্বেও ক্যাম্পাসে তাদের জন্য উপযুক্ত উপাসনালয় নেই। শিক্ষার্থীরা বছরের পর বছর ধরে মন্দির স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসলেও এ বিষয়ে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। ফলে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের জন্য শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ছেড়ে বাইরে যেতে হয়, যা অনেক ক্ষেত্রে সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল এবং বিভিন্নভাবে অসুবিধাজনক হয়ে ওঠে। স্মারকলিপিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে একটি পূর্ণাঙ্গ মন্দির স্থাপিত হলে তা শুধু ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকারকে সুসংহত করবে না, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের অসাম্প্রদায়িক চরিত্রকেও আরও উজ্জ্বল করবে এবং বিভিন্ন ধর্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আন্তরিক সম্প্রীতির পরিবেশ সৃষ্টি করবে।
স্মারকলিপি প্রদান শেষে চন্দন কুমার দাস সাংবাদিকদের বলেন, ক্যাম্পাসে মন্দির না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে সনাতনী শিক্ষার্থীরা নিভৃত উপাসনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি জানান, উপাচার্য তাদের দাবি গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। চন্দনের ভাষায়, মন্দির স্থাপন শুধু ধর্মীয় অনুশীলনের সুযোগ তৈরি করবে না, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ নির্মাণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার দাস গত ১৭ সেপ্টেম্বর জকসু নির্বাচনে ভিপি পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। তিনি জানান যে বিভিন্ন প্যানেলে সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের প্রভাবিতভাবে নিচের পদগুলোতে আটকে রাখা হয়, যদিও যোগ্যতার ভিত্তিতে তারাও শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালনে সক্ষম। সে কারণেই তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাইনরিটি শিক্ষার্থীদের মর্যাদা ও প্রতিনিধিত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচনী ময়দানে লড়ছেন।
চন্দনের দাবি এবং শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা—উভয় দিক মিলিয়ে ক্যাম্পাসে একটি মন্দির স্থাপন এখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে। সনাতনী শিক্ষার্থীরা আশা করছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবশেষে তাদের এই চিরায়িত দাবিটির বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাবে।