
ফরিদপুরের সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে সংঘর্ষ—পালিয়ে যাচ্ছে হিন্দু পরিবার, টহলে পুলিশ
ফরিদপুর:
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের হরিনা গ্রামে রাধা গোবিন্দ মন্দিরের জমি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তেজনাকর হয়ে উঠছে। হামলার পর ভয়-আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন অন্তত পাঁচ শতাধিক হিন্দু পরিবার।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে মন্দিরসংলগ্ন এলাকায় হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। তারা অভিযোগ করেন—১৬ নভেম্বর ভোরে কয়েকশ লোক হামলা চালিয়ে মন্দির ভাঙচুর, বাড়িঘর লুট এবং গ্রামবাসীদের ওপর বেপরোয়া নির্যাতন চালায়। এতে অন্তত ১৫-২০ জন গুরুতর আহত হন। লুট করা হয় প্রায় ১২ লাখ টাকার মালামাল।
স্থানীয়দের দাবি, স্বাধীনতার আগে কেদার নাথ গোপ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাধা গোবিন্দ মন্দির। স্বাধীনতার পর কেদার নাথের আত্মীয় পরিচয়ে জয়দেব ঘোষ জাল দলিল তৈরি করে মন্দিরসহ ৪৫ শতাংশ জমি নিজের নামে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন। সম্প্রতি ওই জমি বাবুল বেপারির কাছে গোপনে বিক্রির পর থেকেই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ—মামলার পর থেকেই হামলায় অভিযুক্তরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিনিয়ত ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। রাতের বেলায় বাড়ির সামনে গিয়ে গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকিও দিচ্ছেন তারা।
স্থানীয় নন্দ ঘোষ, সুদেব মালো, শিখা রানী মালো ও স্বপ্না ঘোষ অভিযোগ করেন—দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরে নিয়মিত পূজা চললেও সম্প্রতি জয়দেব ঘোষ পূজা বন্ধ করতে বাধা দেন। প্রতিবাদ করায় শুরু হয় হামলা। তাদের দাবি—জমি দখল বৈধতা দিতে এ হামলা পরিচালিত হয়েছে এবং বিষয়টির সিসিটিভি ফুটেজও রয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জয়দেব ঘোষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তিনি পলাতক আছেন বলে স্থানীয়রা জানান। আরেক আসামি বাবুল বেপারিও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
এদিকে সদরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুকদেব রায় জানান—মন্দির ভাঙচুর, লুটপাট ও হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। গ্রাম এলাকাটি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে এবং পুনরায় হামলা ঠেকাতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।