
বৈষ্ণবধর্মে আমিষ আহার বর্জনীয় এবং জীবহিংসা নিষিদ্ধ। কিন্তু আমরা জানি শাকসবজিতে প্রাণ আছে। তা হলে খাদ্য রূপে কি গ্রহণ করা যাবে?
উত্তরঃ
বৈষ্ণব ধর্মের বিধি হল ভগবৎ প্রসাদ গ্রহণ করা। শাক-সবজি ফল-মূল ভগবানকে অর্পণের জন্য নির্দিষ্ট হয়েছে। তাই শাক-সবজি ভগবদ্ প্রসাদরূপে গ্রহণে কোনও দোষ নেই। ভগবানের নির্দেশ অমান্য করাটাই দোষ। ভগবানের নির্দেশ হচ্ছে মানুষের খাদ্য শাকসবজি ফলমূল শস্যাদি। সেগুলি আবার ভগবানকে অর্পণ করে তারপর ভগবানের প্রসাদরূপে গ্রহণ করতে হবে।
যেমন, রাষ্ট্রে সেনাপতির নির্দেশে বহু ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়, তখন হত্যাকারীকে দণ্ডভােগের জন্য সরকারের আইনের দ্বারস্থ হতে হয় না। কিন্তু যখনই কেউ নিজের ঘরে কোনও আত্মীয়-স্বজনকেও খুন করে বসে, তখন তাকে দণ্ডভােগ করার জন্য আদালতে আটক থাকতে হয়।
ঠিক সেইরকম, কেউ নিজের মনগড়া বুদ্ধিতে যদি এই সিদ্ধান্ত নেয় যে, শাক-সবজি শস্য খাদ্য না গ্রহণ করে কেবলমাত্র জল কিংবা বাতাস খেয়ে জীবন ধারণ করা উচিত, তা হলেও তার জীবহিংসা হচ্ছে। কারণ, জলে কিংবা বাতাসে অসংখ্য জীব রয়েছে। আমাদের খাদ্যগ্রহণ এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের ফলে সেই সমস্ত জীবের প্রাণহানি হচ্ছে। অতএব কেবল বাতাস খেয়ে থাকলেও জীবহিংসা হচ্ছে। সুতরাং, নিজ নিজ মনগড়া মতে না গিয়ে ভগবৎ-নির্দেশ বৈদিক শাস্ত্রবিধি গ্রহণ করাই বুদ্ধিমত্তার পরিচয় ।