
হিন্দু ইয়ুথ কনফারেন্স ২০২৫: সংখ্যালঘু নিরাপত্তায় ৮ দফা দাবিতে তরুণদের জোরালো আহ্বান
ঢাকা প্রতিনিধি :
রাজধানীতে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হলো হিন্দু ইয়ুথ কনফারেন্স ২০২৫—সনাতনী যুবসমাজের অধিকার, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের দাবিতে এক জোরালো উচ্চারণ। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজারো তরুণ–তরুণীর অংশগ্রহণে রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে আয়োজকরা অভিযোগ করেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আজ নানামুখী সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে সংখ্যালঘুদের বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানান তারা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হিন্দু যুব মহাজোটের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রদীপ কান্তি দে বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হামলা, হয়রানি, রাজনৈতিক নিপীড়ন ও নিরাপত্তাহীনতা বেড়ে যাওয়ায় সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভয় ও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। তাঁর ভাষায়—
“সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হলে বিচার হয় না। বরং যারা ন্যায়বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামেন, তাদের বিরুদ্ধেই মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। এই বৈষম্যমূলক বাস্তবতা বন্ধ করতে হলে রাষ্ট্রকে আমাদের ৮ দফা দাবি অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে।”
বক্তারা জানান, গত কয়েক বছরে বিভিন্ন জেলায় লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, মন্দির ভাঙচুর ও পরিবারভিত্তিক হামলার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ রয়েছে—এসব মামলার বেশিরভাগই দীর্ঘসূত্রতায় আটকে থাকে, ফলে ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার পান না। এই পরিস্থিতি সনাতনী তরুণদের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত করে তুলছে বলেও তারা উল্লেখ করেন।
সম্মেলনে যে ৮ দফা দাবিনামা ঘোষণা করা হয়, তার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হলো—
• সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন
• হামলার বিচার দ্রুততার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল
• মন্দির ও ধর্মীয় সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ
• শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষিত কোটা
• হামলা ও অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ
• ধর্মীয় উৎসবে পূর্ণ নিরাপত্তা প্রদান
• রাজনৈতিক হয়রানি ও মিথ্যা মামলার অবসান
• অন্যায়ভাবে আটক থাকা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের দ্রুত মুক্তি
আয়োজকদের দাবি—এই ৮ দফা বাস্তবায়নে সরকারের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ প্রয়োজন। পাশাপাশি আসন্ন নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো যেন সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, অধিকার ও নীতি-সংক্রান্ত সুস্পষ্ট ঘোষণা দেয়—সেটাও তারা জোর দিয়ে উল্লেখ করেন।
হিন্দু ইয়ুথ কনফারেন্স ২০২৫–এর মাধ্যমে তরুণরা জানিয়ে দেন, দেশের গণতন্ত্র ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি টিকিয়ে রাখতে সংখ্যালঘু নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা আর বিলম্ব করার সুযোগ নেই।