
শিক্ষিত হিন্দু তরুণীদের লক্ষ্য করে লাভ জিহাদে ফাসানোর চক্রান্ত ! দিন দিন বেড়েই চলেছে একের পর এক ধর্মান্তরের ঘটনা
HindusNews ডেস্ক :
ভারত ও বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষিত হিন্দু তরুণীদের নিয়ে একের পর এক ঘটনার পুনরাবৃত্তি উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে পরিবার, সমাজ এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মাঝে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, সম্পর্কের নামে প্রতারণা, প্রভাব বিস্তার, মানসিক নিয়ন্ত্রণ এবং ধর্মান্তরকে কেন্দ্র করে একাধিক তরুণীর জীবন বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে অনেকেই মনে করছেন—শিক্ষিত মেয়েরা আধুনিক জীবন, সম্পর্ক ও স্বাধীনতার প্রতি আস্থাশীল হলেও প্রতারণামূলক সম্পর্কচক্রের কৌশল সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণেই তারা সহজে টার্গেট হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশের বরিশালের বাকেরগঞ্জে ঠিক এমনই আলোচনায় এসেছে সৃষ্টি সাহা নামের এক কলেজছাত্রীর ঘটনা। ৬ নভেম্বর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর জানা যায়, তিনি ধর্মান্তরিত হয়ে সান মাঝি নামে এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে করেছেন। পরিবারের দাবি—সম্পর্কের আড়ালে তাকে বিভ্রান্ত করা ও মানসিকভাবে প্রভাবিত করার মাধ্যমে এই পরিস্থিতিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সৃষ্টি স্থানীয় কলেজে পড়তেন এবং পরিবারের কাছে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ও শান্ত স্বভাবের মেয়ে।
ভারতে মধ্যপ্রদেশের সেহোর জেলাতেও দেখা গেছে প্রায় একই ধরনের আরেকটি মর্মান্তিক ঘটনা। সেখানকার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করা হয় তরুণ মডেল খুশবু আহিরওয়ারের মরদেহ। মুসলিম যুবক মো. কাসিমের সঙ্গে লিভ–ইন সম্পর্কে ছিলেন খুশবু। পরিবারের অভিযোগ—সম্পর্কের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে তাকে মানসিকভাবে দুর্বল করে তোলা হয়েছিল এবং তার মৃত্যু সেই মানসিক চাপেরই করুণ পরিণতি। উচ্চমাধ্যমিক পাস করে কলেজে ভর্তি হওয়ার পরই মডেলিং শুরু করেছিলেন খুশবু, ভবিষ্যৎ নিয়ে তার বড় স্বপ্ন ছিল, কিন্তু সম্পর্কের জটিলতায় তা ভেঙে পড়ে।
তৃতীয় ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে, যেখানে আইনজীবী শেখ মনোয়ার আলমের চেম্বার থেকে উদ্ধার হয় ল–কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী সোনিয়া হালদারের ঝুলন্ত মরদেহ। প্রতিদিন প্র্যাকটিসের জন্য ওই আইনজীবীর কাছে যেতেন সোনিয়া, আর পরিবারের অভিযোগ—সেই সুযোগই দুর্ব্যবহারের মাধ্যমে তাকে প্রতারণার ফাঁদে নেওয়া হয়েছিল। মাত্র ২১ বছর বয়সী সোনিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় পুরো এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
এই ঘটনাগুলোর অভিন্ন বৈশিষ্ট্য হলো—সবাই শিক্ষিত, নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রত্যাশায় ভরপুর, কিন্তু সম্পর্কের নামে প্রতারণার শিকার হয়ে শেষ পর্যন্ত ভয়ংকর পরিণতির দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে তাদেরকে। স্থানীয় সংগঠন ও অভিভাবকদের মতে, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি সম্পর্কের ঝুঁকি, মানসিক প্রভাব বিস্তার কৌশল, ধর্মান্তর প্রতারণা এবং সামাজিক নিরাপত্তা সম্পর্কে অবহিত না থাকার কারণেই তরুণীরা অধিক ঝুঁকির মুখে পড়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন—এ ধরনের প্রতারণা প্রতিরোধে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সচেতনতা ক্যাম্পেইন এখন সময়ের দাবি। শিক্ষার্থীদের হাতে বিতরণ করা উচিত তথ্যবহুল লিফলেট, আয়োজন করা উচিত আলোচনাসভা এবং পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে তৈরি করা উচিত সচেতনতামূলক কাঠামো। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন—শুধু আইন নয়, সামাজিক শিক্ষাই পারে তরুণীদের নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করতে।