
শ্রীরাম জন্মভূমি অযোধ্যার রাম মন্দিরে ১৯১ ফিট গৈরিক ধর্মধ্বজা স্থাপন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
অযোধ্যার শ্রীরাম জন্মভূমি মন্দির আজ আবারও সাক্ষী হলো এক ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় গৌরবের মুহূর্তের। ভগবান শ্রীরামের পবিত্র জন্মভূমিতে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজ হাতে স্থাপন করলেন ১৯১ ফিট উচ্চতার গৈরিক ধর্মধ্বজা, যা অলঙ্কৃত হয়েছে ওঙ্কার, সূর্য দেবতা এবং কোভিদ বৃক্ষ-এর প্রতীকে।
সকাল থেকেই অযোধ্যার বাতাস ভরে ওঠে বেদমন্ত্রোচ্চারণ, ধুনো-ধূপের গন্ধ ও শঙ্খধ্বনিতে। ভক্ত, সাধু, সন্ন্যাসী, এবং দেশের নানা প্রান্ত থেকে আগত অতিথিদের উপস্থিতিতে এক গভীর ভক্তিময় পরিবেশ সৃষ্টি হয় মন্দির প্রাঙ্গণে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের নেতৃবৃন্দ এবং শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের প্রধানগণ।
ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ধ্বজা উত্তোলনের পর প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন,
“এই গৈরিক পতাকা কেবল একখণ্ড কাপড় নয়, এটি ভারতের আত্মা, সনাতন ধর্মের শাশ্বত চেতনা ও ভগবান রামের আদর্শের প্রতীক। শতাব্দীর সংগ্রাম ও অপেক্ষার পর আজ এই মন্দিরে যে ধ্বজা উড়ছে, তা বিশ্বের কোটি কোটি ভক্তের আস্থা ও শক্তির প্রতীক হয়ে থাকবে।”
মন্দিরের প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাস জানান, এই ধ্বজা ভগবান রামের অভয়, ধর্ম, সত্য ও ন্যায়ের জ্যোতি প্রকাশ করছে। তিনি বলেন, “গৈরিক রং আমাদের ত্যাগ, ভক্তি ও জ্ঞানের প্রতীক। আজ শ্রীরামের নামধ্বনি ও এই ধ্বজার দীপ্তি মিলে অযোধ্যার আকাশকে পবিত্র করে তুলেছে।”
মন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক আয়োজনে দেশ-বিদেশ থেকে আগত শিল্পীরা ভগবান রামের বন্দনা, ভজন ও নৃত্যানুষ্ঠান পরিবেশন করেন। সন্ধ্যায় অযোধ্যার সারাব্যাপী প্রদীপ প্রজ্বালনে আলোকিত হয় রামনগরী, যেন পুনরায় ফিরে এসেছে সেই প্রাচীন ত্রেতা যুগের মাহাত্ম্য।
গৈরিক ধর্মধ্বজার উচ্চতা—১৯১ ফিট—প্রতীকীভাবে নির্দেশ করে অষ্টাদশ পুরাণ ও এক ব্রহ্ম জ্ঞানের মিলিত শক্তি। স্থপতিরা জানিয়েছেন, এটি এমনভাবে নির্মিত হয়েছে যাতে ঝড়-ঝঞ্ঝাতেও অটল থাকে, যেমন অটল ভগবান রামের ধর্মপথ।
অযোধ্যার এই পবিত্র দিনে এক নতুন ইতিহাস রচিত হলো—যেখানে আকাশে উড়ছে সনাতন ধর্মের অমর প্রতীক, আর বিশ্বব্যাপী কোটি ভক্তের হৃদয়ে বাজছে এক ধ্বনি—
“জয় শ্রীরাম!”