
ধান মাড়াইকে কেন্দ্র করে হিন্দু পরিবারের ওপর জঘন্য হামলার চেষ্টা: অস্ত্র উদ্ধার, অভিযুক্তরা পলাতক
নিজস্ব প্রতিবেদক :
মৌলভীবাজারের আমতৈল ইউনিয়নে ধান মাড়াইকে কেন্দ্র করে হিন্দু পরিবারের ওপর নৃশংস হামলার চেষ্টা চালিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী সুলেমান মিয়া ও তার দুই ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, বিকেল আনুমানিক চারটার দিকে ৯ নং আমতৈল ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের যদুর অলহা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার হন স্থানীয় অ্যাডভোকেট সুজিত শর্মা ও তার পরিবারের সদস্যরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অ্যাডভোকেট সুজিত শর্মা সুলেমান মিয়ার ধান মাড়াইয়ের মেশিন ব্যবহার করতে অস্বীকৃতি জানান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সুলেমান মিয়া (৫০) তার দুই ছেলে সুলতান মিয়া (২৫), বদরুল মিয়া (২০) এবং আরও কয়েকজন নিয়ে সুজিত শর্মার বাড়িতে ঈর্ষণীয় বর্বরতায় হামলে পড়েন। তাদের হাতে ছিল রামদা, চুলফি, চায়নিজ কুড়াল, লাঠি-সোটা ও অন্যান্য দেশীয় ধারালো অস্ত্র। অভিযোগ রয়েছে—হামলাকারীরা সরাসরি প্রাণনাশের উদ্দেশেই বাড়িতে প্রবেশ করে।
স্থানীয় প্রতিবেশীদের দ্রুত এগিয়ে আসায় বড় ধরনের ঘটনার হাত থেকে সুজিত শর্মা ও তার পরিবার রক্ষা পান। লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে সুলেমান মিয়ার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল দেশীয় অস্ত্র—চায়নিজ কুড়াল, ছুরি, চাকুসহ একাধিক ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। তবে পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে সুলেমান মিয়া ও তার দুই ছেলে সহ প্রধান অভিযুক্তরা এলাকা ত্যাগ করে পলাতক হয়ে যায়।
হামলার শিকার হিন্দু পরিবারটি বর্তমানে তীব্র আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। এলাকাবাসীর বরাতে জানা গেছে, সুলেমান মিয়া ও তার ছেলেরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত এবং কোনো শালিস-বৈঠক বা সামাজিক নিয়ম-নীতি মানে না। স্থানীয়রা আরও জানান, তারা ওয়াড বিএনপি ও যুবদলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত এবং মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যকলাপের সাথে তাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। তাদের বেপরোয়া আচরণে সাধারণ মানুষ বহুদিন ধরে অতিষ্ঠ ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
পুলিশ জানায়, ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং পলাতক সকল আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।