
"নারীর মর্যাদার প্রশ্নে, সনাতনই সর্বশ্রেষ্ঠ"
একমাত্র সনাতন ধর্মই নারীকে ও পুরুষকে নারী ও পুরুষ না ভেবে মানুষ হিসেবে মর্যাদা দিয়েছে। আর তাই সনাতন ধর্মে-
১. নারীর রাষ্ট্র শাসক হওয়ার অনুমোদন আছে
২. নারীর অনুমতি আছে যোদ্ধা ও সেনাপতি হবার
৩. নারীর অনুমতি আছে পুরুষের সাথে সমানতালে চাকরি করার, অনুমোদিত সকল পেশায় সমান্তরালে কাজ করার।
৪. নারী ও পুরুষের উভয়েরই আছে মুক্তভাবে স্বাভাবিক সুন্দর পোশাক পরিধানের অধিকার, নেই পোশাক নিয়ে মধ্যযুগীয় চিন্তাধারা ও বাড়াবাড়ি।
৫. একমাত্র সনাতন ধর্মেই নারীর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে
ঈশ্বরীয় ঐশী গ্রন্থ, যা অন্য কোন মতবাদ কল্পনাই করতে পারেনা।
৬. একমাত্র সনাতন ধর্মেই আছে অনেক ইতিহাসখ্যাত নারী ধর্মগুরু, মহামানব, ধর্মীয় দিকনির্দেশক।
৭. সনাতন ধর্মে নারীকে ঘরের বাইরে বের হতে পুরুষের অনুমতি নিয়ে বের হতে হবে, সকল কিছুতে পুরুষের কথা শুনে চলতে হবে এমন কোন বাড়াবাড়ি নেই।
৮. নরকের অধিকাংশ পরিপূর্ণ থাকবে নারী দিয়ে এমনধরনের বিদ্বেষপূর্ণ কথাবার্তা সনাতন ধর্মে নেই।
৯. সনাতন ধর্মে নারী ও পুরুষের জ্ঞান, বুদ্ধি, মেধাকে সমান মর্যাদা দেয়া হয়েছে, কোথাওই বলা হয়নি দুইজন নারীর জ্ঞান একজন পুরুষের সমান। সনাতন বৈদিক আইনে কোর্টে ১ পুরুষের সাক্ষীকে ২ নারীর সমান ধরা হয়না।
১০. সনাতন ধর্মে স্ত্রীকে স্বামীর অধীন নয় বরং স্বামী ও স্ত্রীকে পরস্পর পরস্পরের সহযোগী বলা হয়েছে।
১১. অন্য মতবাদের মতো স্ত্রীকে প্রহার করার অনুমতি সনাতন ধর্ম দেয়নি।
১২. পৌরাণিক সনাতন ঐতিহ্যে নারীকে দেবীজ্ঞান করা হয়েছে।
১৩. যেখানে অন্যান্য মতবাদের গ্রন্থে ব্যাকরণিকভাবেই স্রষ্টার নাম পুরুষবাচক শব্দ, সেখানে একমাত্র পবিত্র বেদ ও সনাতন ধর্মেই স্রষ্টার নারীবাচক নাম ও সম্বোধন রয়েছে।
১৪. সনাতন ধর্মগুরুরা দিনরাত ধর্মীয় জনসভায় নারীকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলেনা।
১৫. সনাতনীরা সারাবছর ধরে অফলাইন ও অনলাইনে নারীর পোশাক, নারীর চলাফেরা, নারীর চরিত্র নিয়ে পড়ে থাকেনা।
১৬. সনাতন ধর্মশাস্ত্রে নারীর বাল্যবিবাহের অনুমতি নেই, হিন্দু ধর্মীয় বক্তারা দিনরাত বাল্যবিবাহের পক্ষে সাফাই গান না।
তাই হ্যাঁ, একমাত্র সনাতন ধর্মই নারীকে দিয়েছে সর্বোচ্চ সম্মান। যুগে যুগে ধর্মব্যবসায়ীরা তা ক্ষুণ্ণ করার অনেক প্রচেষ্টা চালালেও শেষপর্যন্ত সফল হতে পারেনি, সনাতনীরাই সেইসব ব্যবসায়ীদের কুচক্রী জাল ছিন্ন করে প্রতিষ্ঠা করেছে দেবীশক্তি
সনাতনই ধর্ম, ধর্মই সনাতন। মানব কল্যাণে অমৃত জ্ঞান প্রদানকারী ধর্মই সনাতন। সনাতন সর্বদা মানবকে ঐক্য ও সাম্যের শিক্ষা প্রদান করে। কারণ ঈশ্বর কখনোই বিভেদ বা বৈষম্যের শিক্ষা মানবকে প্রদান করেনি। সেজন্য একমাত্র পবিত্র বেদ বলছে,
"মনুর্ভব জনয়া দৈবং জনম্"
-ঋগ্বেদ, ১০/৫৩/৬
অর্থাৎ, প্রকৃত মানুষ হও এবং অন্যকেও মানুষ হিসেবে গড়ে তোল।
কিন্তু বর্তমান সময়ে কিছু অজ্ঞানী ও অসত্য প্রচারকারীরা সনাতন ধর্মকে বিভিন্ন সময়ে তাদের কাল্পনিক তত্ত্ব বা ভূয়া যুক্তি প্রমাণ দিয়ে মিথ্যা এবং বিভেদ তৈরি করতে সদা অবিচল রয়েছে। তবে মিথ্যে দিয়ে সত্যকে ঢাকা যায় না। সত্য সর্বদাই বিজয় অর্জন করে। সেজন্য মুন্ডক উপনিষদে ০৩/০১/০৬ বলা হয়েছে, "সত্যমেব জয়তে" - সত্যই জয় লাভ করে।
নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রদানে পবিত্র বেদই সর্বশ্রেষ্ঠ। কেননা বেদই ধর্মের মূল এবং অপুরুষেয় গ্রন্থ।
নারীর প্রতি মর্যাদা :
"য়ত্র নার্য়্যস্ত পূজ্যন্তে রমন্তে তত্র দেবতাঃ।
য়ত্রৈতাস্তু ন পূজ্যন্তে সর্বাস্তত্রাফলাঃ ক্রিয়াঃ"।।
- মনুস্মৃতি ৩/৫৬
অর্থাৎ, যেখানে নারীদের যথাযথ শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করা হয়, সে সমাজ দিব্য গুণ তথা দিব্য ভোগ (উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি) লাভ করে। যে সমাজে নারীদের যোগ্য সম্মান করে না, তারা যতই মহৎ কর্ম করুক না কেন, তার সবই নিষ্ফল হয়ে যায়।
"তস্মাদেতাঃ সদা পূজ্যা ভূষণাচ্ছাদনাশনৈঃ। ভূতিকামৈর্নরৈর্নিত্যং সৎকরেষূউসর্বেষু চ"।।
- মনুস্মৃতি৩/৫৯
অর্থাৎ, একজন পিতা, ভাই, পতি যারা ঐশ্বর্য কামনা করে, তারা স্ত্রীলোকদের সম্মান প্রদর্শন তারাপ্রসন্ন রাখবে এবং পোশাক ও খাদ্য দ্বারা আবৃত রাখবে। স্ত্রী জাতিকে সর্বদা পবিত্র হিসেবে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করবে।
নারীর পবিত্র বেদ পাঠে, যজ্ঞানুষ্ঠান করার অধিকার:
"যথেমাং বাচং কল্যাণীমাবদানি জনেভ্যঃ
ব্রহ্মরাজন্যাভ্যাং শূদ্রায় চার্য্যায় চ স্বায় চারণায়।।
প্রিয়ো দেবানাং দক্ষিণায়ৈ দাতুরিহ ,ভূয়াসময়ং মে কামঃ সমৃধ্যতামুপ মাদো নমতু ।।
➢ যজুর্বেদ ২৬/২
বঙ্গানুবাদঃ হে মনুষ্যগন আমি যেরূপে ব্রাক্ষণ, ক্ষত্রিয় ,বৈশ্য ,শূদ্র , স্ত্রীলোক এবং অন্যান্য সকল জনগনকে এই কল্যানদায়িনী পবিত্র বেদবাণী বলিতেছি, তোমরাও সেই রূপ কর। যেমন বেদবাণীর উপদেশ করিয়া আমি বিদ্বানদের প্রিয় হয়েছি, তোমরাও সেইরুপ হও। আমার ইচ্ছা বেদ বিদ্যা প্রচার হোক। এর দ্বারা সকলে মোক্ষ এবং সুখ লাভ করুক ।
নিম্নোক্ত মন্ত্র আরো স্পষ্ট রুপে উপলব্ধি করা যায় যে একজন পুরুষের জন্য যেমন ষোল সংস্কার, চতুরাশ্রম এবং পঞ্চ মহাযজ্ঞ এর বিধান রয়েছে তেমনি নারীর জন্য সে সংস্কার গুলোর বিধান রয়েছে ।
"ব্রহ্মচর্যেণ কন্যা যুবানং বিন্দতে পতিম্।
অনডবান্ব্রহ্মচর্যণাশ্চো ঘাসং জিগীর্ষতি"৷।
- অথর্ববেদ ১১/৫/১৮
ভাবার্থ : কন্যার ব্রহ্মচর্যের দ্বারা পূর্ণ বিদুষী এবং যুবতি হয়ে পূর্ণ ব্রহ্মচারী যুবক পুরুষের সাথে বিবাহ করা উচিত। যেমন ভাবে বলবান্ ষাঁড় ও ঘোড়া ইত্যাদি শীঘ্রগামী পশু ঘাস ইত্যাদি খেয়ে ব্রহ্মচর্য নিয়মের মাধ্যমে সঠিক সময়ে বলবান সন্তান উৎপন্ন করে, ঠিক তেমন ভাবে বিদ্বান যুবক তার অনুরূপ বিদুষী কন্যা বিয়ে করে নিয়মপূর্বক বলবান্ ও সুশীল সন্তান করা উচিত।
"যা দম্পতী সমনসা সুনুত আ চ ধাবতঃ।
দেবাসো নিত্যয়াহশিরা"।।
- ঋগ্বেদ-৮/৩১/৫
অর্থাৎ, হে বিদ্বান্ গণ! যে পত্নী ও পতি একসঙ্গে একমনে যজ্ঞ করে। উপাসনা দ্বারা যাহাদের মন পরমাত্মার দিকে ধাবমান হয় তাহারা নিত্য পরমাত্মার আশ্রয়েই সব কার্য্য করে।
নারীর বেদোধ্যয়ন, ষোল সংস্কার এর বিধান থাকার পরেও যারা অভিযোগ করে সনাতন নারীকে কোনো অধিকার দেয়নি তাদের পুনরায় ভাবা উচিত। সনাতন ধর্মে নারী ঋষি, যোদ্ধা, শাসক হওয়ার অধিকার রয়েছে যা পৃথিবীর অন্য মতে নেই।
নারীর শাসক:
"উপোপ মে পরা মৃশ মা মে দভ্রাণি মন্যথাঃ।
সর্বাহমস্মি রোমশা গন্ধারীণামিবাবিকা"।।
- ঋগ্বেদ ১/১২৬/৭
অর্থাৎ, রাজা যেমন রাজ্যের শাসনকর্তা হয়, রাণী তেমনি রাজ্যের রক্ষাকারিণী হয়, নারী সর্বপ্রকার গুণবতী হয়, নারীর কর্মক্ষমতাকে ছোট করে দেখো না, তার গুণ ও কর্মকে বিবেচনায় নাও।
লোপামুদ্রা,বাক,মৈত্রীয়,গার্গী,পৌলমি,জুহু,শ্রদ্ধা,ঊর্বশী সহ মোট ৩০ জন বেদের মন্ত্র দ্রষ্টা ঋষি রয়েছে। কিন্তু তারপরও সনাতন ধর্ম বিদ্বেষীগণ হয়তো ভূলে গিয়েছে যে পবিত্র বেদ এ বলা হয়েছে,
''নারীকে উপহার হিসেবে জ্ঞান দাও''।।
-অথর্ববেদ - ১৪/১/৬
''নারী হলো জ্ঞানের ধারক''।।
-অথর্ববেদ - ৭/৪৭/১
"অহং কেতুরহং মূর্ধাহমুগ্ৰা বিবাচনী । মমেদনু ত্রুতুং পতিঃ সেহানায়া উপাচরেৎ"॥
- ঋগ্বেদ ১০/১৫৯/২
অর্থাৎ, আমি জ্ঞানবতী, গৃহে মুখ্যস্থানীয়া ধৈৰ্য্য শালিনী, বক্তৃতাকারিণী ও শত্রুনাশিনী। আমার পতি আমার অনুকূলে থাকিয়া গৃহকর্ম সম্পাদন করুন।
"পুরুষেভ্যো গোভ্যো অশ্বেভ্যঃ শিবা"
-অথর্ববেদ--৩/২৮/৩
অর্থাৎ, তারা সর্বভূতের কল্যণদায়িনী, সর্ববিজয়া।
পতিগৃহে নারী আশ্রিত নয় বা ২য় স্থানে নয় বরং তাহাকে সম্রাজ্ঞী বলা হয়েছে,
"যথা সিন্ধুর্ণদীনাং সম্রাজ্যং সুষুবে বৃষা।
এবা ত্বং সম্রাজ্ঞ্যেধি পত্যুরস্তং পরেত্য"।।
- অথর্ব্ব বেদ ১৪।১।৪৩
অর্থাৎ, হে বধূ! যেমন বলবান সমুদ্র নদী সমূহের উপর সাম্রাজ্য স্থাপন করিয়াছে তুমিও তেমন পতিগৃহে গিয়া সম্রাজ্ঞী হইয়া থাক।
"স্যোনাদ্যোনেরধি বুধ্যমানৌ হসামুদৌ মহসা মোদমানৌ।
সুগূ সুপুত্রৌ সুগৃহৌ তরথেঃ জীবাবুষসো বিভাতীঃ"।।
-অথর্ব্ব বেদ ১৪।২।৪৩
অর্থাৎ, হে দম্পতি! শান্তি পূর্ণ গৃহে জ্ঞান লাভ করিয়া, হাস্য ও অনন্দ কর। সচ্চরিত্র পুত্র লাভ কর এবং শান্তিতে জীবন অতিবাহিত কর।
পতিপত্নী উভয়কে সমান অধিকার ও নির্দেশ:
"ইহৈব স্তং মা বি যৌষ্টং বিশ্বমায়ুর্বশ্নুতম্।
ক্রীড়ান্তৌ পুত্রৈনর্প্তৃভিমোর্দমানৌ স্বস্তকৌ"।।
- অথর্ব্ব বেদ ১৪।২।২২
অর্থাৎ, হে দম্পতি! তোমরা উভয়ে একসঙ্গে থাইকো, পৃথক হইওনা। নিজের গৃহে পুত্র ও পৌত্রদের সঙ্গে খেলিয়া আনন্দ করিয়া পূর্ণ আয়ু ভোগ কর।
"স্যোনাদ্যোনেরধি বুধ্যমানৌ হসামুদৌ মহসা মোদমানৌ।
সুগূ সুপুত্রৌ সুগৃহৌ তরথেঃ জীবাবুষসো বিভাতীঃ"।। - অথর্ব্ব বেদ ১৪।২।৪৩
অর্থাৎ, হে দম্পতি! শান্তি পূর্ণ গৃহে জ্ঞান লাভ করিয়া, হাস্য ও অনন্দ কর। সচ্চরিত্র পুত্র লাভ কর এবং শান্তিতে জীবন অতিবাহিত কর।
নারী সর্বদা পবিত্র:
"ধর্ত্র্যসি ধরণী" -যজুর্বেদ ১৪/২১
অর্থাৎ, হে নারী! তুমি পরিবারের ধারক, শুদ্ধ, এবং মর্যাদার পালক হও।
নারীর সুখেই সংসার সূখী হয়:
"শোচন্তি জামযো যত্র বিনশ্যত্যশু তত্ কুলম
ন শোচন্তি তু যত্রৈতা বর্ধতে তদ্ধি সর্বদা"।
- মনুস্মৃতি ৩/৫৭
অর্থাৎ, যে পরিবারে পুরুষের অপকর্মের জন্য নারীরা অসুখী হয় সেই পরিবার ধ্বংস হতে বাধ্য। এবং যে পরিবারে নারী সদস্যরা সুখী সে পরিবারে সর্বদা সুখ সমৃদ্ধি বিরাজ করে।
নারীর প্রতি অন্যায় করার শাস্তি:
"পুরুষাণাং কুলীনানাং নারীণাং.... হরণে বধং অর্হতি"।। - মনুস্মৃতি-৮/৩২৩
অর্থাৎ, নারী অপহরণকারীদের মৃত্যুদণ্ড হবে।
" পরদারাভিমর্ধেষু প্রবৃত্তান্নৃন্মহীপতিঃ। উদ্বেজনকরৈর্দন্ডৈশ্চিহ্নয়িত্বা প্রবাসয়েৎ"
-মনুস্মৃতি- ৮/৩৫২
অর্থাৎ, যারা নারীদের ধর্ষণ করে বা উত্ত্যক্ত করে বা ব্যভিচারে প্ররোচিত করে, তাদের এমন শাস্তি দিতে হবে যাতে তা অন্যদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করে এবং কেউ তা করতে আর সাহস না পায়।
উপরোক্ত বিশ্লেষণ থেকে আমরা সত্যি উপলব্ধি করতে পারি সনাতন ধর্মে নারীর মর্যাদা, অধিকার সর্বোত্তম। শুধু শাস্ত্রের মধ্যে তাহা সীমাবদ্ধ নেই বরং ইতিহাস বারংবার তা ধ্বনিত হয়েছে। নারী কখনো ঝাসী রাণী হয়ে রাজ্যের কর্ণধার হয়েছে, তো কখনো প্রীতিলতা হয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে। বৈদিক শাস্ত্র এবং জ্ঞান বিজ্ঞানে ঋষি লোপামুদ্রা রেখে স্বর্নাক্ষর অবদান। বেদ এর নারীকে জ্ঞানের ধারক, শত্রুনাশিনী, পবিত্রতম বলে সম্মোধন করা হয়েছে। আমরা পবিত্র বেদ এর অমর বাণী অনুসরণ করে নারীকে প্রতিষ্ঠা করি শ্রেষ্ঠতম স্থানে। নারী শক্তির জয় হোক।