
দেশের সর্বোচ্চ শ্রীকৃষ্ণের বিগ্রহ উদ্বোধন করলেন ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার
HindusNews ডেস্ক :
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে দেশের সর্বোচ্চ শ্রীকৃষ্ণের বিগ্রহের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এবং আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসব–২০২৫ এক মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে হোসেনপুর ইউনিয়নের মধ্যরামচন্দ্রপুর (বৃন্দাবনপাড়া) গ্রামে অবস্থিত শ্রীশ্রী রাধা গোবিন্দ ও কালী মন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এ ঐতিহাসিক মুহূর্তে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার শ্রী মনোজ কুমার। তিনি সস্ত্রীক বিগ্রহ উন্মোচন ও মহোৎসব উদ্বোধন করেন।
বিগ্রহ উদ্বোধনের পর আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসবের বিশেষ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সহকারী হাইকমিশনার মনোজ কুমার বলেন—বাংলাদেশ ও ভারতের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতির বন্ধন যুগযুগান্ত ধরে অটুট। শ্রীকৃষ্ণের এই মহাকায় বিগ্রহ শুধু সনাতন ভক্তদের জন্যই নয়, দুই দেশের মানুষের সৌহার্দ্যের প্রতীক হিসেবেও কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে গীতা পাঠ করেন ফরিদপুরের গোপীনাথ দাস ব্রহ্মচারী। তাঁর সুশ্রাব্য উচ্চারণে মন্দির প্রাঙ্গণে সৃষ্টি হয় গভীর আধ্যাত্মিক আবহ।
উদ্বোধনী আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি ও গাইবান্ধা–৩ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মইনুল হাসান সাদিক, পলাশবাড়ী থানার ওসি জুলফিকার আলী ভুট্টোসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, মন্দির কর্তৃপক্ষ ও হাজারো ভক্তবৃন্দ। অতিথিদের ফুলেল অভ্যর্থনা জানান মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী হরিদাস বাবু।
মন্দির কর্তৃপক্ষ জানায়, আধ্যাত্মিক ধারণা ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যে নির্মিত এই মন্দিরে ইতোমধ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দেব–দেবীর ১৪৪টি পৃথক প্রতিমা স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে। বিশাল পরিসর, মনোমুগ্ধকর শিল্পকলা এবং সমৃদ্ধ ধর্মীয় পরিবেশের কারণে এটি এখন দেশের অন্যতম বৃহৎ ও আকর্ষণীয় মন্দির হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
গাইবান্ধা, রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ছাড়িয়ে দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রতিদিন হাজারো সনাতনী ভক্ত ও দর্শনার্থী মন্দিরে আসছেন প্রার্থনা, পূজা ও দর্শনের জন্য। আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসব উপলক্ষে আজ মন্দির প্রাঙ্গণে ছিল উৎসবমুখর জনসমাগম, শোভাযাত্রা, ভক্তিগীতি, আরতি ও ধর্মীয় উপাসনার এক অনন্য সম্মিলন।
সনাতন ধর্মবলম্বীদের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষিত এই মহাবিগ্রহ উদ্বোধনের মাধ্যমে পলাশবাড়ী এখন দেশের ধর্মীয় পর্যটনে এক নতুন অধ্যায় যুক্ত করল—এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় ভক্ত ও আগত দর্শনার্থীরা।