
গোয়ায় ৫৫০ বছরের ঐতিহ্য উদযাপনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাতে উদ্বোধন হলো ৭৭-ফুট ব্রোঞ্জের ভগবান শ্রী রামের মূর্তি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারতের ঐতিহাসিক Shree Samsthan Gokarn Partagali Jeevottam Math–এ এক মহিমান্বিত আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উদ্বোধন করলেন ৭৭-ফুট উচ্চতার ব্রোঞ্জের ভগবান শ্রী রামের মূর্তি। পাঁচ শতাধিক বছরের ঐতিহ্য বহনকারী এই আধ্যাত্মিক আসন এবার পূর্ণ করছে তার ৫৫০ বছরের গৌরবময় যাত্রা, আর সেই উপলক্ষেই মঠ প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়েছে বহু দিনের বিশেষ উৎসব।
মূর্তিটি নির্মাণ করেছেন বিখ্যাত ভাস্কর রাম সুতার, যিনি এর আগে “Statue of Unity”–র মতো বিশ্ববিখ্যাত ভাস্কর্য তৈরি করে আন্তর্জাতিক পরিচিতি অর্জন করেছেন। শ্রী রামের বিশাল ব্রোঞ্জ প্রতিমা গোয়ার আকাশরেখায় এক নতুন আধ্যাত্মিক মাত্রা যোগ করেছে, আর স্থানীয়দের মতে এটি শুধু সৌন্দর্যের নিদর্শন নয়—বরং ধর্মীয় পরিচয়, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সমাজের ঐক্যের প্রতীক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, অযোধ্যায় রামমন্দিরে পবিত্র পতাকা উত্তোলনের পরপরই গোয়ায় এই বিরাট মূর্তি উদ্বোধন তার জন্য এক বিশেষ অনুভূতি। তিনি আরও বলেন, ভারতের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য হাজার বছরের, এবং এই ধরনের উদ্যোগ সেই ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের সামনে আরও শক্তভাবে তুলে ধরে।
মঠের ৫৫০ বছরের ইতিহাসকে স্মরণীয় করে তুলতে শুধু মূর্তি নয়, উদ্বোধন করা হয়েছে Ramayana Theme Park–ও। পার্কটির মাধ্যমে দর্শনার্থীরা রামায়ণের বিভিন্ন অধ্যায়, চরিত্র এবং সংস্কৃতিকে আধুনিক উপস্থাপনার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা করার সুযোগ পাবেন। পুরো মঠ এলাকা সাজানো হয়েছে নতুন স্থাপনা, আধুনিক সুবিধা এবং আধ্যাত্মিক অনুভূতিকে কেন্দ্র করে তৈরি সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প দিয়ে, যা গোয়াকে ধর্মীয় পর্যটনের একটি নতুন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
উৎসব উপলক্ষে প্রকাশ করা হয়েছে একটি স্মারক ডাকটিকিট এবং স্মারক মুদ্রা, যা এই ঐতিহাসিক মাইলফলককে আরও স্মরণীয় করে তুলেছে। ১১ দিনব্যাপী এই আয়োজন দেখতে ইতোমধ্যেই হাজারো দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছে, এবং আয়োজকদের মতে প্রতিদিনই ভিড় আরও বাড়বে।
গোয়ার গৌড় সারস্বত সম্প্রদায়ের কাছে এই মঠ শুধু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নয়, বরং ইতিহাস, শিক্ষা ও সামাজিক নেতৃত্বের কেন্দ্র। তাদের কাছে ৭৭-ফুট রামের মূর্তি এক নতুন প্রেরণা—যা তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় ও আধ্যাত্মিক ভিত্তিকে আরও দৃঢ় করবে।
এই মহা উদ্বোধন গোয়ার সাংস্কৃতিক মানচিত্রে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে—যেখানে ঐতিহ্য, শিল্প ও আধ্যাত্মিকতার অনবদ্য সমন্বয় দেখা গেল এক মঞ্চে।