১৭তম বিজেএস: সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও গেজেটবঞ্চিত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুব্রত পোদ্দার

1 day ago
VIEWS: 201

HindusNews ডেস্ক :

১৭তম বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের (বিজেএস) ফল প্রকাশের দীর্ঘ নয় মাস পর গতকাল ২৭ নভেম্বর আইন মন্ত্রণালয় যে নিয়োগ-গেজেট প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়—বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন (বিজেএসসি) কর্তৃক সুপারিশপ্রাপ্ত ১০২ জনের মধ্যে মাত্র ৮৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কোনো কারণ উল্লেখ না করেই বাদ পড়েছেন ১৩ জন সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুব্রত পোদ্দার। তিনি প্রিলিমিনারি, লিখিত এবং মৌখিক—সবগুলো ধাপ পেরিয়ে চূড়ান্ত তালিকায় নাম পেয়েছিলেন, কিন্তু তবুও গেজেটে স্থান হয়নি। তাঁর মতোই বাদ পড়েছেন ঢাকা, রাজশাহী, জগন্নাথ, চট্টগ্রাম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও ১২ জন মেধাবী প্রার্থী।

এ নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। সহপাঠীরা জানান, সুব্রত পোদ্দার কখনোই কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না; বরং তিন বছর ধরে লাইব্রেরির এক কোণে বসে অমানুষিক পরিশ্রম করেছেন শুধু বিজেএস-এর জন্য। বহু শিক্ষার্থী দাবি করছেন, সুব্রত একজন নিরপেক্ষ, সৎ ও পরিশ্রমী মানুষ—এমন একজনের নাম গেজেটে না থাকাটা তাঁদের কাছে রহস্যজনক ও বেদনাদায়ক। কেউ কেউ বলছেন, সুব্রত জুলাই আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন; সেটিই কি তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হলো? আবার কেউ প্রশ্ন তুলে বলেছেন—মতাদর্শ থাকলেও কি তার যোগ্যতা কেড়ে নেওয়ার অধিকার রাষ্ট্রের আছে?

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আলমগীর হোসেন তাঁর ফেসবুক পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন যে, সুব্রত একজন নিরপেক্ষ মানুষ, আর সেই নিরপেক্ষতাই কি তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ালো? তিনি আরও লিখেছেন যে এই আঁধার শীঘ্রই কেটে যাবে এবং সুব্রতের গেজেট প্রকাশিত হবেই। অন্যদিকে, সাবেক ক্যাম্পাস সাংবাদিক জয়নাল আবেদিন বলেছেন, সুব্রত দাদা তিন বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তাকে কখনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত দেখা যায়নি। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও যদি শুধু মতাদর্শ বা অদৃশ্য চাপে কাউকে বাদ দেওয়া হয়, তাহলে এই বৈষম্য কি কোনদিনই শেষ হবে না?

নিজের প্রতিক্রিয়ায় সুব্রত পোদ্দার জানান, তিনি এখনও মন্ত্রণালয়ের ওপর আস্থা রাখতে চান এবং খুব শিগগিরই রি-ভেরিফিকেশনের জন্য আবেদন করবেন। তাঁর বিশ্বাস, শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচার হবে এবং তাঁর পরিশ্রম বৃথা যাবে না।

এ বিষয়ে জানতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মোহা. আলমগীর হোসেন বলেন, বিষয়টি আইন বিভাগের দায়িত্ব। আর আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর মঞ্জুরুল হোসেন জানান, অনেক কর্মকর্তার পদোন্নতির কারণে নিচের স্তরে কর্মকর্তার প্রয়োজন হয়েছিল। যাদের রিপোর্ট আগে পাওয়া গেছে, তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাকিদের রিপোর্ট সম্পন্ন হয়ে গেলে ১৫–৩০ দিনের মধ্যেই তারা যোগ দিতে পারবেন এবং কারও সিনিয়রিটি নষ্ট হবে না বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। তিনি আরও বলেন, গেজেট না পাওয়া প্রার্থীদের নিয়ে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে রোববার একটি প্রেস নোট প্রকাশ করা হবে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে—যোগ্যতা, সততা ও নিরপেক্ষতার জায়গা কোথায়? কেন সুপারিশপ্রাপ্ত ১৩ জনকে কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই বাদ দেওয়া হলো? রাষ্ট্রীয় নিয়োগে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে এই ঘটনা। সুব্রত পোদ্দারসহ বঞ্চিতদের প্রতি সহানুভূতি ও সমর্থন জানিয়ে অনেকেই বলছেন—ন্যায়বিচার পাওয়া তাঁদের অধিকার, এবং রাষ্ট্রকে অবশ্যই তা নিশ্চিত করতে হবে।

to join the global Sanatani Hindu Community
Connect with Sanatani Hindus from all over the world — share, learn, and grow together.
Explore Questions, Bhajan Lyrics, Leelas, Feeds, Business Pages, Products, plus Shlokas, Events, Courses, Jobs, Marriage, Help Posts, and more.
মন্তব্য করতে Login অথবা Registration করুন