
১১০ বছর বয়সেও মেলেনি মাথা গোঁজার ঠাঁই: প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে অনাহারে দিন কাটছে রেনুকা বালার
নিরব কুমার দাস, নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার সফাপুর ইউনিয়নের চকগৌড়ি গ্রামে চোখে পড়ে হৃদয়বিদারক এক বাস্তবতা—জীবনের শতায়ু পার করা ১১০ বছর বয়সী রেনুকা বালা আজও বসবাস করছেন ভাঙাচোরা একটি কুঁড়েঘরে। সঙ্গে রয়েছেন তার একমাত্র প্রতিবন্ধী ছেলে। বয়সের ভার, দারিদ্র্য, অভাব আর অবহেলার নির্মম চক্রে বন্দী এই মা-ছেলের জীবন যেন সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি নীরব প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছে।
জরাজীর্ণ ঘর, ঝুঁকিতে জীবন
মহাদেবপুরের চকগৌড়ি গ্রামে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, বৃষ্টি–ঝড়ে টিকে থাকার মতো কোনো অবস্থা নেই ঘরটির। মরিচাধরা টিনের চাল, অসংখ্য ছিদ্র, ভাঙা বেড়া—পলিথিন আর বাঁশ দিয়ে কোনো রকমে ঠেকানো। শীতের রাতে হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় প্রায় জবুথবু হয়ে কাটে মা–ছেলের রাত। প্রতিবেশীরা জানান, ঘরটি যেন মৃত্যুফাঁদ; যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে।
ক্ষুধা, অনাহার আর বেঁচে থাকার লড়াই
রেনুকা বালার কোনো আয় নেই। বয়সের কারণে তিনি চলাফেরা করতে পারেন না। খাবার থাকলে রান্না হয়, না থাকলে উপোস করেই রাত কাটে। তার ছেলে প্রতিবন্ধী; কোনো কাজ করতে পারেন না, উল্টো মায়ের ওপরই নির্ভর করতে হয়। গ্রামের মানুষ মাঝেমধ্যে যা দেয়, তাই দিয়েই চলে তাদের দিন।
এক প্রতিবেশী দুঃখ প্রকাশ করে বললেন,
“বুড়ি মা আর তার পাগল ছেলের কষ্ট দেখা যায় না। ঘরটা যেকোনো সময় ভেঙে পড়বে। কেউ যদি একটা থাকার ব্যবস্থা করে দিত, ওদের বাঁচা সহজ হতো।”
কোথায় সরকারি সহায়তা?
বয়স ১১০ বছর হলেও রেনুকা বালা এখনো পাননি কোনো সরকারি আবাসন সহায়তা। নেই ভাতা, নেই চিকিৎসার সুব্যবস্থা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উদাসীনতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে প্রশাসনিক ত্রুটি।
কান্নাভেজা কণ্ঠে রেনুকা বালা বলেন—
“বাবা, আমার তো মরার বয়স হইছে। কিন্তু আমার এই পাগলা ছেলেটা? বৃষ্টি আইলে ঘরে থাকা যায় না, পানি পড়ে। কয়দিন ঠিকমতো খাইও না। তোমরা যদি একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দিতা, মরেও শান্তি পাইতাম।”
মানবিক সহায়তার আবেদন
এলাকাবাসীর দাবি—
অতি দ্রুত এই অসহায় মা–ছেলের জন্য একটি বাসযোগ্য ঘর, নিয়মিত খাবার, এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
রেনুকা বালা ও তার ছেলেকে সাহায্য করতে যোগাযোগ করতে পারেন—
বিকাশ নম্বর: 01304674901