
শ্রীলঙ্কায় মেয়াদোত্তীর্ণ ত্রাণ পাঠাল পাকিস্তান!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের পর দেশজুড়ে যখন জরুরি অবস্থা জারি, তখন আন্তর্জাতিক সহায়তার হাত বাড়িয়েছে প্রতিবেশী দেশগুলো। ভারত ও পাকিস্তান দু’দেশই ত্রাণ পাঠিয়েছে সংকটময় এই সময়ে। কিন্তু পাকিস্তানের পাঠানো ত্রাণ এখন উল্টো দেশের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। কারণ, পাকিস্তান থেকে পাঠানো খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেটগুলোর গায়ে স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল—মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অক্টোবর ২০২৪-এ, অর্থাৎ এক বছর আগেই।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রীলঙ্কায় এখন পর্যন্ত ৩৯০ জনের প্রাণহানি সংঘটিত হয়েছে, হাজারো মানুষ গৃহহীন। ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়াহ-এর তাণ্ডবে দেশ জুড়ে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বিপর্যয়। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সহায়তা নিঃসন্দেহে প্রয়োজনীয় ছিল। কিন্তু ত্রাণের খাবার মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় সেটি সহায়তা নয়, বরং অপমান বলেই মনে করছেন অনেক শ্রীলঙ্কান।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে পাকিস্তান হাই কমিশনের নিজেরই একটি পোস্ট থেকে। এক্স (টুইটার) প্ল্যাটফর্মে তারা শ্রীলঙ্কায় ত্রাণ পাঠানোর ছবি প্রকাশ করে। সেই ছবিতেই দেখা যায়—খাবারের প্যাকেটগুলোতে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ১০/২০২৪। পোস্টে পাকিস্তান হাই কমিশন লিখেছিল, “সর্বদা একসঙ্গে! শ্রীলঙ্কার ভাই-বোনদের সহায়তায় পাকিস্তান পাশে আছে।” কিন্তু ছবিতে থাকা তারিখই পুরো গল্প বদলে দেয়। মুহূর্তেই পোস্টটি ভাইরাল হয়, শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাকিস্তানের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন শ্রীলঙ্কান নাগরিকরা।
সমালোচনার মাত্রা বাড়তে থাকায় পাকিস্তান হাই কমিশন পোস্টটি দ্রুত সরিয়ে নেয়। তবে ক্ষোভ থামেনি। শ্রীলঙ্কার স্থানীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক সংগঠনগুলোও প্রশ্ন তুলেছে—মানবিক বিপর্যয়ের মুহূর্তে মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার পাঠানো কতটা দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত? ভারতীয় গণমাধ্যমও এই ঘটনাকে পাকিস্তানের “নির্লজ্জ অবহেলা” বলে উল্লেখ করেছে।
শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ। যখন একটি দেশের মানুষের জীবন বাঁচানোর তাগিদে দ্রুত খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন, তখন মেয়াদোত্তীর্ণ ত্রাণ পাঠানোর ঘটনা দেশটির ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে হতাশা ও অপমানের অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। মানবিক সহায়তার নামে এমন ভুল কতটা অগ্রহণযোগ্য—এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও আলোচনা শুরু হয়েছে।