
কোচিং বাণিজ্যে জড়িত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ : ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে তালিকা জমা দিতে নির্দেশ
HindusNews ডেস্ক :
রাজশাহী অঞ্চলে সরকারি শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্যে সম্পৃক্ততা রোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ের পক্ষ থেকে সকল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) পাঠানো একটি চিঠিতে এই নির্দেশনা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়।
রাজশাহী আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক প্রফেসর মোহা. আছাদুজ্জামান জানান, চিঠিটি ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং কেউ যদি কোন শিক্ষক বা কর্মচারীর কোচিং সেন্টার কিংবা কিন্ডারগার্টেন পরিচালনায় সম্পৃক্ততার প্রমাণ দিতে চান, তারা সরাসরি কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারবেন। অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জানা গেছে, রাজশাহী বিভাগীয় মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণ কমিটির জুন ও সেপ্টেম্বর ২০২৫ সালের সভায় শিক্ষকদের বাণিজ্যিক কোচিং কার্যক্রমের বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেখানে সরেজমিনে যাচাই করে দেখা হবে কোন শিক্ষক কোচিং সেন্টার বা কিন্ডারগার্টেনের সঙ্গে যুক্ত আছেন কিনা এবং যুক্ত থাকলে তা আইনবিরোধী হওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে—এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্তেরই ধারাবাহিকতায় এবার জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের নির্দেশনা পাঠানো হলো।
মাউশি জানিয়েছে, শিক্ষকদের মধ্যে অনিয়ম ও স্বার্থসংঘাত রোধে পূর্বেও সতর্কতামূলক চিঠি পাঠানো হয়েছিল। তবুও অভিযোগ অব্যাহত থাকায় এবার আরও কঠোরভাবে তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ চলছে। উপজেলা ও থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসগুলোকে সরেজমিন যাচাই করে নির্ভুল, যাচাইকৃত এবং প্রমাণযোগ্য তথ্য সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। এসব তথ্য নির্ধারিত ছকে পূরণ করে আঞ্চলিক কার্যালয়ে পাঠাতে হবে।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অনেকেই মনে করছেন, সরকারি শিক্ষকরা যদি বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন ঠিকমতো করেন এবং বাইরে কোচিং বাণিজ্য না করেন, তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা বাড়বে এবং শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ভিত্তিক পাঠদানের মানোন্নয়ন ঘটবে। অন্যদিকে কিছু শিক্ষক সংগঠন মনে করে, সুযোগ-সুবিধা ও বাস্তবতা বিবেচনা না করে হঠাৎ কঠোর পদক্ষেপ নিলে শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হতে পারে। তবে প্রশাসন জানিয়েছে, শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়নের স্বার্থেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং কেউ নিয়ম ভঙ্গ করলে ছাড় দেওয়া হবে না।
রাজশাহী বিভাগের প্রতিটি জেলা থেকে তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। যে সব শিক্ষক-কর্মচারী কোচিং বা কিন্ডারগার্টেন পরিচালনায় যুক্ত, তাদের তালিকা সময়মতো পাঠানোর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। নির্দেশ অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।