



হাটহাজারীতে মন্দিরের পুকুর বেআইনিভাবে দখলের অভিযোগ!
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার চৌধুরী হাটে অবস্থিত শ্রী শ্রী ব্রহ্মানন্দ যোগাশ্রম ও মুক্তাকেশী বিগ্রহ মন্দিরের পুকুর নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ আবারও নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। বহু বছর ধরে মামলাটি আদালতে চলমান থাকা অবস্থায় সম্প্রতি পুকুরের একাংশে জোরপূর্বক বেড়া তুলে দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মন্দির কর্তৃপক্ষের দাবি, এই দখল হাইকোর্টের স্পষ্ট নির্দেশনা অমান্য করেই করা হয়েছে।
মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রী বীরেশ্বরানন্দ মহারাজ জানান, পুকুরটি প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই মন্দিরের সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আদালতে মামলা চললেও হাইকোর্টের পূর্ববর্তী রায়ে বলা হয়েছিল—পুকুরটি ব্যবহার করা যাবে, কিন্তু দখল কিংবা মালিকানা দাবি করা যাবে না। সেই নির্দেশ কার্যকর থাকার পরও হঠাৎ করে স্থানীয় একটি পক্ষ পুকুরের একাংশ টিনের বেড়া দিয়ে ঘিরে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। মহারাজের ভাষায়, “এটা শুধু দখলই নয়, আদালতের আদেশের প্রতি প্রকাশ্য অবমাননা।”
ঘটনার পর মন্দিরের সেবায়েত ও স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। পুকুরটি বহু প্রাচীন মন্দিরের ধর্মীয় আচার–অনুষ্ঠানের একটি অপরিহার্য অংশ। ১৩০৫ বঙ্গাব্দে প্রতিষ্ঠিত এই মন্দির এতদিন আধ্যাত্মিক চর্চা, সামাজিক অনুষ্ঠান এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের ধর্মীয় প্রয়োজন মেটানোর স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। পুকুরের ওপর দখল প্রতিষ্ঠার চেষ্টা মন্দিরের ঐতিহ্য এবং স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা—দুটিকেই হুমকির মুখে ফেলছে বলে মনে করছেন ভক্ত ও সেবায়েতরা।
মন্দির কর্তৃপক্ষ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে দখল চলতে দেয়া হলে মন্দিরের সম্পত্তি রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে এবং দীর্ঘদিনের আইনি লড়াই অর্থহীন হয়ে যাবে। তবে এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক মন্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।
হাইকের্টের আদেশ অমান্য করে দখল—এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে এলাকার পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মন্দির কর্তৃপক্ষ দ্রুত বিচারিক এবং প্রশাসনিক পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে, যাতে প্রাচীন এই মন্দিরের সম্পদ আগের মতোই সুরক্ষিত থাকে।