‘হরে কৃষ্ণ হরি বোল, দাঁড়িপাল্লা টাইনে তোল’: ব্যতিক্রমী স্লোগানে খুলনা-১ আসনে আলোচনায় জামায়াত প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী

3 days ago
VIEWS: 99

HindusNews ডেস্ক :

খুলনা-১ আসনের নির্বাচনী মাঠে হঠাৎ করেই নতুন আলোচনা—এক ব্যতিক্রমী স্লোগানকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ভোটারদের মধ্যে তৈরি হয়েছে কৌতূহল ও বিতর্ক। “হরে কৃষ্ণ হরি বোল, দাঁড়িপাল্লা টাইনে তোল”—এমনই ব্যতিক্রমী স্লোগান দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নতুন প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী। ধর্মীয় আবহমান চেতনা এবং জামায়াতের রাজনৈতিক প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’কে একসাথে ব্যবহার করার এই কৌশল ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বটিয়াঘাটা এলাকায় দলীয় নেতাদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু করেন কৃষ্ণ নন্দী। তিনি জামায়াতে ইসলামীর ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি এবং পেশায় একজন ব্যবসায়ী। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারী একজন নেতা হওয়ায় তার এই প্রার্থীতা যেমন অনেককে বিস্মিত করেছে, তেমনি স্লোগানটিও স্থানীয় ভোটারদের মধ্যে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খুলনা-১ (বটিয়াঘাটা-দাকোপ) আসন বরাবরই আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এই আসনে হিন্দু ভোটারদের প্রভাব অত্যন্ত বেশি এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বেশ কয়েকটি নির্বাচনে এখানকার সংখ্যালঘু প্রার্থীরাই জয়ী হয়েছেন। ১৯৭৩ সালে কুবের চন্দ্র বিশ্বাস, পরে প্রফুল্ল কুমার শীল, পঞ্চানন বিশ্বাস ও ননী গোপাল মণ্ডল এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিএনপির জয় শুধুমাত্র ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনে। জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান ঐতিহাসিকভাবেই দুর্বল।

এই প্রেক্ষাপটে হিন্দু প্রার্থী দিয়ে এবং ধর্মীয় অনুভূতি-নির্ভর স্লোগান সামনে রেখে মাঠে নামা জামায়াতের প্রচেষ্টা—ভোটের অঙ্কে নতুন চমক হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

স্থানীয় ভোটারদের অনেকে বলছেন, কৃষ্ণ নন্দীর ব্যবহৃত স্লোগানটি হিন্দু জনগোষ্ঠীর মধ্যে আবেগ তৈরি করছে এবং প্রচারণায় ভিন্ন স্বাদ নিয়ে এসেছে। কেউ কেউ মনে করছেন, জামায়াতের প্রার্থী হয়ে একজন হিন্দু নেতার এমন স্লোগান দেওয়া সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি নতুন বার্তা। আবার প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষগুলো মন্তব্য করছে—ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগিয়ে ভোট প্রভাবিত করার কৌশল হিসেবেও দেখা যেতে পারে এই প্রচারণা।

এ বিষয়ে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, “আমি কোনো বিভাজন চাই না। আমার স্লোগান শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়নের ডাক। আমি সব সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই। নির্বাচিত হতে পারলে এই এলাকায় বাড়ি তৈরি করে মানুষের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত থাকব।”

খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মুন্সী মিজানুর রহমান জানান, কৃষ্ণ নন্দীর পক্ষে প্রচারণার জন্য দল থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। “প্রথম দিনেই প্রচারণায় মানুষের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে”—বলেই তিনি দাবি করেন।

প্রচারণার সুবিধার্থে স্থানীয় এলাকায় বাসা ভাড়া নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন কৃষ্ণ নন্দী। তার গ্রামের বাড়ি ডুমুরিয়ার চুকনগরে হলেও বটিয়াঘাটা-দাকোপ আসনে অবস্থান বাড়িয়ে প্রচারণাকে সক্রিয় রাখার চেষ্টা করছেন তিনি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াত এবার খুলনা-১ আসনে প্রচলিত রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশের বাইরে গিয়ে একটি নতুন পরীক্ষায় নেমেছে। সংখ্যালঘু সংখ্যাধিক্য এলাকায় হিন্দু প্রার্থী দিয়ে ভোট সমীকরণ ভাঙতে সক্ষম হবে কি না—এখন সেটিই দেখার বিষয়।

to join the global Sanatani Hindu Community
Connect with Sanatani Hindus from all over the world — share, learn, and grow together.
Explore Questions, Bhajan Lyrics, Leelas, Feeds, Business Pages, Products, plus Shlokas, Events, Courses, Jobs, Marriage, Help Posts, and more.
মন্তব্য করতে Login অথবা Registration করুন