
রামুতে ভাবনা কেন্দ্র ভাঙচুর: সাম্প্রদায়িক হামলা নয়, নেপথ্যে জমি নিয়ে বিরোধ—গ্রেপ্তার ৩
নিজস্ব প্রতিবেদক, রামু (কক্সবাজার):
কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি ধ্যান কেন্দ্রের পরিত্যক্ত ভবন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। তবে প্রশাসন নিশ্চিত করেছে, এটি কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নয় বরং দীর্ঘদিনের জমি-সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ বিরোধের জের। এ ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর ২০২৫) সকাল ৯টার দিকে রামুর রাজারকুল ইউনিয়নের পূর্ব রাজারকুল সদ্ধমোর্দয় ব্রহ্মবিহার ও ধ্যান কেন্দ্রের ভাবনা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও প্রশাসনের পদক্ষেপ
ঘটনার পরপরই রামু থানা পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সহকারী কমিশনার (ভূমি), সেনাবাহিনী ও বিজিবির একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। প্রশাসনের তৎপরতায় পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে।
সরেজমিনে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভাবনা কেন্দ্রের জমি নিয়ে স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এরই এক পর্যায়ে শুক্রবার সকালে প্রতিপক্ষের লোকজন ওই কেন্দ্রের একটি পরিত্যক্ত ভবনের অংশবিশেষ ভাঙচুর করে।
মামলা ও গ্রেপ্তার
এ ঘটনায় প্রজ্ঞা বিনয় ভিক্ষু বাদী হয়ে রামু থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে একটি এজাহার দায়ের করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন: মৃত উপেন্দ্র বড়ুয়ার ছেলে সমদেশ বড়ুয়া লুলু, তার ছেলে রনি বড়ুয়া এবং মৃত সুবাস বড়ুয়ার ছেলে রনি বড়ুয়া।
মামলায় অভিযুক্ত অন্য পলাতক আসামিরা হলেন—মৃত অতীন্দ্র বড়ুয়ার ছেলে সজিব বড়ুয়া, তার স্ত্রী মুন্নী বড়ুয়া এবং মৃত ধনঞ্জয় বড়ুয়ার ছেলে জীবেন্দ্র বড়ুয়া। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রশাসনের বক্তব্য
রামু উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি সম্পূর্ণ জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ থেকে উদ্ভূত। এটিকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রশাসন এ বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো প্রকার গুজব বা উস্কানি না ছড়ায়, সেদিকে কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।