
হিন্দুপল্লীতে বয়স্ক ভাতার কার্ডের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগে জামায়ত কর্মী আটক
HindusNews ডেস্ক :
বগুড়া সদরের বেলাইল হিন্দুপল্লীতে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে স্থানীয় অসহায় হিন্দু নারী–পুরুষের কাছ থেকে টাকা আদায়ের অভিযোগে মোকসেদ আলী নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে এলাকাবাসীর প্রতিবাদ ও উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে তাকে আটক করা হয়। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাতে জানা যায়, কয়েকদিন আগে মোকসেদ আলী নিজেকে সরকারি সুবিধা প্রাপ্তি–সংক্রান্ত কাজের ‘সাহায্যকারী’ পরিচয় দিয়ে হিন্দু পল্লীতে যান। সেখানে বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তিনি বহু মানুষের কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি এবং ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করেন। অনলাইনে আবেদন করার নাম করে প্রতি জনের কাছ থেকে ৫০০ টাকা নেন। অভিযোগ রয়েছে, টাকা নেওয়ার সময় তিনি ভোটারদের আগামী জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতের প্রতীক দাঁড়িপাল্লায় ভোট দেওয়ার জন্যও প্রলুব্ধ করেন।
এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর শনিবার বেলা ১২টার দিকে তিনি তার এক মুরুব্বিকে নিয়ে পুনরায় এলাকাটিতে এলে ক্ষুব্ধ জনতা তাকে ঘিরে ধরে। জিজ্ঞাসাবাদে চাপের মুখে মোকসেদ কিছু অনলাইন আবেদনের কপি ফেরত দিলেও পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আশপাশের লোকজন ঘটনাটি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বগুড়া সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তবে থানার ওসি ফোনে বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরে পুলিশের মিডিয়া উইং থেকে মোকসেদকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করা হলেও তিনি জামায়াত কর্মী নন, বরং ‘টাউট’—এমন মন্তব্য করা হয়।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর থেকেই একটি প্রভাবশালী মহল তাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া এবং ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ অভিযোগে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ আরও বেড়েছে।
অন্যদিকে, বগুড়া জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আ. মালেক দাবি করেছেন—মোকসেদ জামায়াতের কেউ নন, তাকে দলীয় পরিচয়ের সাথে যুক্ত করা উদ্দেশ্যমূলক।
ঘটনাটি হিন্দুপল্লীর মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। সরকারি ভাতার নামে প্রতারণা ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভোটকে লক্ষ্য করে এমন কর্মকাণ্ডের অভিযোগকে তারা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন।