ধর্ম অবমাননার ‘ভিত্তিহীন’ অভিযোগে কুমিল্লায় অন্তঃসত্ত্বা নারী গ্রেপ্তার: প্রমাণের অভাবেও মিলছে না মুক্তি!

1 day ago
VIEWS: 348

HindusNews ডেস্ক :

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসলাম ধর্ম অবমাননার তথাকথিত অভিযোগের জেরে তৃষা দাস চৌধুরী নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি, অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, মনগড়া এবং পরিকল্পিত। কোনো দৃশ্যমান প্রমাণ বা ডিভাইস বিশ্লেষণের রিপোর্ট না থাকা সত্ত্বেও একজন গর্ভবতী নারীকে কারাগারে পাঠানো—একে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলেই মনে করছেন স্থানীয় মানুষ, মানবাধিকার কর্মী ও সংখ্যালঘু সংগঠনগুলো।

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার একটি দল শহরের মনোহরপুর এলাকা থেকে গত সপ্তাহে তৃষাকে আটক করে। তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন জব্দ করা হলেও, কথিত ধর্মীয় অবমাননার পোস্টের কোনো স্ক্রিনশট, লিংক বা প্রযুক্তিগত প্রমাণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে উপস্থাপন করা হয়নি।

থানা সূত্র জানায়, ‘তৃষা দাস চৌধুরী’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে ইসলাম ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করা হয়েছে—এমন অভিযোগ থানায় করেন ‘টিম প্রোটেক্ট আওয়ার সিস্টার্স বিডি’-এর কয়েকজন সদস্য। অভিযোগকারীদের সঙ্গে ছিলেন হেফাজতে ইসলাম কুমিল্লা শাখার আমির মুফতি শামসুল ইসলাম জিলানি। উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির আশঙ্কায় “তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা” নেওয়ার কথা জানিয়ে পুলিশ তৃষাকে গ্রেপ্তার দেখায়।

তবে পরিবারের সদস্যদের দাবি—এটি এক ধরনের টার্গেটেড হয়রানি এবং সংখ্যালঘু নারীদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক নিপীড়নেরই অংশ। তৃষার স্বজনরা বলেন, “আইডিটি তাঁর নয়। ফোনে কোনো আপত্তিকর পোস্ট নেই। পুলিশের কাছে এটুকু বলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।”

তৃষা দাস চৌধুরীর অন্তঃসত্ত্বা থাকার বিষয়টি স্থানীয়দের মধ্যে আরও তীব্র উদ্বেগ তৈরি করেছে। চিকিৎসকদের মতামত অনুযায়ী, এমন অবস্থায় একজন নারীর জন্য মানসিক চাপ এবং বন্দী জীবন দুটিই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু মামলার তথাকথিত “প্রাথমিক অভিযোগ”কেই যথেষ্ট ধরে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে—যা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ—বাংলাদেশে বারবার ধর্মীয় অনুভূতির অপব্যবহার করে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে এবং এসব অভিযোগ বেশিরভাগ সময়ই প্রমাণহীন থাকে। তাদের দাবি, “ধর্ম অবমাননার নামে ভয় দেখানো, আতঙ্ক ছড়ানো এবং সংখ্যালঘুদের আরও প্রান্তিক করার এক সংস্কৃতি গড়ে তোলা হচ্ছে।”

মানবাধিকার কর্মী এক অনলাইন বক্তব্যে প্রশ্ন তুলেছেন—
“যে অভিযোগের একটিও প্রমাণ নেই, তা সত্ত্বেও একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীকে কারাবন্দি করা কি রাষ্ট্রের মানবিকতা ও ন্যায়বিচারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ? আইন কি শুধুই সংখ্যাগরিষ্ঠের জন্য?”

এ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংখ্যালঘু সংগঠন, মানবাধিকার কর্মী ও প্রগতিশীল নাগরিকরা প্রতিবাদ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। অনলাইনে #FreeTrishaDas হ্যাশট্যাগে শুরু হয়েছে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন।

তৃষার পরিবার অবিলম্বে তাঁর নিঃশর্ত মুক্তি, মামলা প্রত্যাহার এবং ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক হয়রানির বিরুদ্ধে বিচার দাবি করেছে।

তাঁদের ভাষায়—
“একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে বিনা প্রমাণে বন্দি রেখে কোনো সভ্য রাষ্ট্র এগোতে পারে না।”

to join the global Sanatani Hindu Community
Connect with Sanatani Hindus from all over the world — share, learn, and grow together.
Explore Questions, Bhajan Lyrics, Leelas, Feeds, Business Pages, Products, plus Shlokas, Events, Courses, Jobs, Marriage, Help Posts, and more.
মন্তব্য করতে Login অথবা Registration করুন