সতীদাহ প্রথার করুন ইতিহাস বানারীপাড়ায় কালের সাক্ষী সহমরন-সমাধি

1 day ago
VIEWS: 74

সুমন দেবনাথ, বরিশাল প্রতিনিধি :

সতীদাহ প্রথা ছিল একটি ঘৃণ্য সামাজিক কুপ্রথা, যেখানে মৃত স্বামীর চিতায় সহধর্মিণীকে সহমরণে (অর্থাৎ, একত্রে পুড়ে মারা) বাধ্য করা হত। অর্থাৎ এক হিন্দু বিধবা নারীর স্বামীর মৃত্যুর পর তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার চিতায় সহমরণে বা জীবন্ত দাহ হওয়ার এক অমানবিক প্রথা, যা ১৮২৯ সালে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের অধীনে আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়। রাজা রামমোহন রায়ের সামাজিক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আইনটি পাস করা হয়েছিল।

'সতী' শব্দটি একজন সতীসাধ্বী নারীকে বোঝায়, এবং এই প্রথায় বিধবা স্ত্রীকে তার স্বামীর প্রতি চূড়ান্ত ভক্তি ও সততা প্রদর্শনের জন্য স্বামীর চিতার সঙ্গে সহমরণে যেতে বাধ্য করা হতো।

সনাতন ধর্মের অতীত ইতিহাসে এক সময়কার ভয়াবহ ও নির্মম এক প্রথার নাম সতীদাহ। এই প্রথা অনুযায়ী, স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকে জীবন্তভাবে তাঁর চিতায় সমাহিত করা হতো—যেন স্বামীর সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর জীবনাবসান ঘটে। সমাজ একে 'সতীত্বের চূড়ান্ত প্রকাশ' বলে মনে করত, অথচ প্রকৃতপক্ষে এটি ছিল নারীর প্রতি এক নির্মম নিপীড়ন।

বাংলাদেশের বরিশাল জেলার বানারীপাড়া পৌর এলাকায় আজও এই প্রথার একটি জীবন্ত স্মৃতি বহন করে চলেছে একটি সহ-মরণ সমাধি, যেখানে বিশ্বাস করা হয় যে একসময় এক স্ত্রীকে তাঁর মৃত স্বামীর সঙ্গে জীবন্ত আগুনে দাহ করা হয়েছিল। এই সমাধি শুধু একটি স্থাপত্য নয়, এটি ইতিহাসের নীরব সাক্ষী—যা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় অতীতের অমানবিক রীতিনীতি ও নারীর অবমূল্যায়নের এক নির্মম অধ্যায়।

সতীদাহ প্রথা আজ বিলুপ্ত। মানবিক মূল্যবোধ, শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসারে সমাজ আজ অনেক দূর এগিয়েছে। এই মরণ সমাধি যেন আমাদের ভবিষ্যতের জন্য এক শিক্ষা হয়ে থাকে—কোনো সংস্কৃতি, যত পুরনোই হোক না কেন, যদি তা মানবতার বিরোধী হয়,

বানারীপাড়া পৌর শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঐতিহ্যবাহী ঘোষের বাড়ির প্রাচীন নিদর্শন এ ‘সহমরণ’ মঠটি দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন-অবহেলায় পড়ে রয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রাচীন সতীদাহ প্রথা অনুযায়ী, স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকেও একই চিতায় জীবন দিতে হতো। এই মঠটি তারই নিদর্শন। ধর্মীয় গোড়ামী ও কুসংস্কারচ্ছন্ন সেই অন্ধাকার যুগের স্মৃতিচিহৃ সতীদাহ মঠটি সরকারিভাবে রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন উপজেলা পূজা উদযাপন ও হিন্দু-বৈদ্য-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

বানারীপাড়া পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী ঘোষের বাড়ির পুকুর পাড় ও রাস্তার পাশে সহমরন-সমাধি (সতীদাহ মঠ) টি অবস্থিত। স্থানীয়রা জানান, আগে মঠের গায়ে নামফলক খোদাই করা ছিল। কে বা কারা সেটি তুলে ভুল তথ্য সম্বলিত একটি টিনের সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দিয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে ‘সহমরণ সমাধি, স্থাপিত ১৮৪৩ খ্রিষ্টাব্দ’।

এ বিষয়ে বানারীপাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার তরুনেন্দ্র নারায়ন ঘোষ (তরুণ ঘোষ) ও তার স্ত্রী মায়া ঘোষ জানিয়েছেন, প্রায় দুইশ বছর আগে এ বাড়ির ধর্ম নারায়ন ঘোষের মৃত্যু হলে পারিবারিক শ্মশানে তার সৎকার করা হয়। ওই সময় প্রাচীন রীতি অনুযায়ী একই শ্মশানের একই চিতায় তার স্ত্রী হেমলতা ঘোষকেও সৎকার করা হয়।

প্রসঙ্গত উপমহাদেশে সতীদাহ প্রথা ও এর বিলোপ সম্পর্কে জানা গেছে, ‘সতী’ নামটা এসেছিল দেবী সতীর থেকে। তিনি ছিলেন রাজা দক্ষের কন্যা, একইসাথে দেবাদিদেব শিবের স্ত্রী। দক্ষ মেনে নিতে পারেননি তার মেয়ে কোনো শ্মশানবাসী ভবঘুরেকে বিয়ে করবে। একদিন সতীর সামনেই শিবকে কঠোর ভাষায় দক্ষ তিরস্কার করলে স্বামীর অপমান সহ্য না করতে পেরে সতী আত্মহনন করেন। মৃত স্বামীর সাথে চিতায় ওঠার এই প্রথার নাম সতী লিখেছিলেন এংলো-ইন্ডিয়ান লেখকরা। আসলে একে বলা হত ‘সহগমন’, ‘সহমরণ’ বা ‘সতীদাহ’। ‘সতীব্রত’ বলে এক প্রথা চালু ছিল, যেখানে নারী তার স্বামীকে কথা দিত, স্বামী যদি আগে গত হয়, তবে সেও সহমরণে যাবে। সতীপ্রথা পালন করা হলে নারীকে বলা হত ‘সতীমাতা’।

সতীদাহের কোনো আদেশ বেদে নেই বলে জানা যায়, বরং মরণোত্তর স্ত্রীকে স্বাভাবিক জীবন পার করতেও বলা হয়েছে। সনাতন ধর্মের পুরাণে বহু চরিত্র আছেন যারা স্বামীর মৃত্যুর পর বহাল তবিয়তে বেঁচে ছিলেন। কিন্তু সহমরণ কোনো নতুন বিষয় ছিল না, এমনও নয় যে ভারতে প্রথম এমন প্রথা চালু হয়েছিল, কিংবা ভারতকে দিয়েই শেষ হয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ অব্দের সহমরণের বর্ণনাও পাওয়া গেছে। তাহলে কিভাবে সতীদাহ এত প্রচলিত হয়ে পড়লো?

কোনো পরিবার থেকে একজন নারী সতী হওয়া মানে বিরাট সম্মানের বিষয় ছিল। একজন নারীর তার স্বামীর প্রতি চূড়ান্ত অধীনতা, সতীত্ব ও ধর্মপরায়ণতার লক্ষণ ছিল এই প্রথা। ছেলের মৃত্যুর পর তার বউ বাড়িতে থাকা আলাদা একটা বোঝার মতোন ছিল। স্বভাবতই সব পরিবার চাইত তাদের বউটিও সহমরণে গিয়ে তার এই স্বল্পদামী জীবনের বিনিময়ে পরিবারের সম্মান বাড়াক।

কিন্তু দেখা যেত অনেক ছোট বয়সে বিধবা হয়ে গেছে, স্বামীর মৃত্যুতে হতবিহবল হলেও শোকের মাতম তোলার কারণ নেই। আবার বউটি বেশ বিষয় বুদ্ধিসম্পন্ন। পরলোকের প্রতিশ্রুতির চেয়ে বড় তার কাছে আরো কিছুক্ষণের জন্য বেঁচে থাকা। এমন সব নারীরা চিতায় ওঠার আগে বেঁকে বসতো। আসলে খুব কম নারীই ছিল যারা দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা আগুনের দিকে পরলোকের মোহে পড়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে যেত। কেউ কেউ চিৎকার করে কাঁদত, ছেড়ে দিতে বলত। এই আওয়াজ যেন কেউ না শোনে তাই শবযাত্রীরা ঢোল, মাদল, বাঁশির আওয়াজে ভরিয়ে তুলত। অনিচ্ছুক মেয়েদের খাওয়ানো হত আফিম জাতীয় ওষুধ, যেন তারা অজ্ঞান হয়ে পড়ে। কাউকে মাথার পেছন দিকে আঘাত করে অজ্ঞান করে ফেলা হত। লক্ষ্য রাখা হত আঘাত আবার এত জোরে না হয় যাতে মেয়েটা মরেই যায়। রীতি অনুযায়ী জীবিত পোড়াতে হবে। তাহলেই স্ত্রী পরবর্তী জন্মে উঁচু বংশে জন্মাতে পারবে, ভাগ্য ভালো হলে এই স্বামীর স্ত্রী হয়েই।

পরের জন্মে সম্মান অথবা সমাজে দর্প করে বেড়ানোর আশায় ১৫০০ সাল থেকে ১৮০০ সাল পর্যন্ত কয়েক হাজার নারীকে জীবিত পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে স্বামীর চিতায়।

সহমরণে যাওয়ার কিছু নিয়ম ছিল। এর মাঝে ছিল যারা সহমরণে যেতে পারবে না তাদের তালিকা- যদি কোনো নারীর সন্তান এতই ছোট হয় যে নিজের দেখাশোনা করতে পারে না, যদি কোনো নারী মাসিক চলার সময়ে থাকেন, যদি তার গর্ভে বাচ্চা থাকে। মুঘল শাসন শুরু হওয়ার পর থেকে সহমরণ বন্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন সম্রাটরা, বাদ সাধলো ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা’র অভিযোগ। শিশুর মাকে সহমরণে যেতে না দেওয়ার নিয়ম বেঁধে দিয়েছিলেন সম্রাট শাহজাহান। বাদশাহরা নিয়ম করেন, কাউকে দিয়ে সতীদাহ পালন করাতে হলে তার অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু বাদশাহরা যেহেতু মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধানে নামতেন না, প্রজাদের সুখ দুঃখের সাথে মিশে যেতে পারতেন না, স্বামীর পরিবার ঘুষ দিয়ে অনুমতি আদায় করে নিত।

উইলিয়াম কেরি আর রাজা রামমোহন রায়দের মতো মানুষ না আসলে এই ভয়ংকর প্রথা হয়তো আরো অনেক দশক চলতো। উইলিয়াম কেরি ছিলেন একজন ব্যাপ্টিস্ট মিশনারী, এসেছিলেন ইংল্যান্ড থেকে। ১৭৯৯ সালে তার এক নারীর সহমরণ দেখার সুযোগ হয়েছিল। এই দৃশ্যে তার আত্মা কেঁপে ওঠে। এই আচার বন্ধ না করা পর্যন্ত স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন না ঠিক করেন। তিনি ও তার দুই সহকর্মী জোশু মার্শম্যান ও উইলিয়াম ওয়ার্ড মিলে সতীদাহ বন্ধের জন্য উপর মহলের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে শুরু করেন। তৎকালীন গর্ভনর জেনারেল লর্ড ওয়েলেসলির কাছে তারা সতীদাহের সমস্ত বিবরণ উল্লেখ করে সতীদাহ বিরোধী নিবন্ধ লিখে পাঠান।

১৮১২ সালে রামমোহন রায় সতীদাহ বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন। তিনি দেখেছিলেন তার বৌদিকে জোর করে চিতায় তুলতে। শ্মশানে শ্মশানে ঘুরে তিনি মৃতের বাড়ির লোকজনকে বোঝানোর চেষ্টা চালিয়ে যান। ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে এই কাজে আরো অনেক অনুসারী জুটিয়ে নেওয়া কষ্টের ছিল না। এদের মাঝে দল তৈরি করে দেন, যাতে তারাও বিভিন্ন শ্মশানে যেতে পারে। তিনি তার লেখায় প্রমাণ করেন, হিন্দুশাস্ত্র সতীদাহের কথা বলে না। ১৮১৫-১৮ সালে সতীদাহ প্রথা বিকট আকার ধারণ করলে রামমোহন রায় ১৮২১ সালে একটি পুস্তিকা আর উইলিয়াম কেরি ১৮২৩ সালে একটি বই প্রকাশ করেন। কোম্পানি মূলত গোড়াদের চটাতে চাইতো না। তাই শক্তভাবে সতীদাহবিরোধী কিছু হয়নি। কলকাতাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হলেও আশেপাশের বহু এলাকাতে সতীদাহ চলতে থাকে। ১৮২৮ সালে লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক অনেক দায়িত্ব মাথায় করে ভারতের গর্ভনর হয়ে আসেন। বেন্টিঙ্ক এই প্রথা বন্ধে আর এক মুহুর্তও যেন দেরি করতে পারছিলেন না। চার্লস মেটকাফে বেন্টিঙ্ককে বলেন, ভারতে ইংরেজ রাজত্বের অবস্থা বিশেষ ভালো নয়। সতীদাহ বন্ধ করলে বিদ্রোহীরা বিপ্লবের সুযোগ খুঁজতে পারে। বেন্টিঙ্কের কাছে বিপ্লবের ভয়ের চেয়ে বড় হয়ে দেখা দিয়েছিল বিধবাদের জীবন।

৪ ডিসেম্বর, ১৮২৯ সাল। লর্ড বেন্টিঙ্ক আইন জারি করে সতীদাহ নিষিদ্ধ ও সতীদাহের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের ফৌজদারি আদালতে শাস্তির ব্যবস্থা করেন। এর অনুবাদের দায়িত্ব দেওয়া হয় উইলিয়াম কেরিকে। ধার্মিক কেরি সেদিন তার চার্চ বাদ দিয়েছিলেন অনুবাদ করার জন্য। তার মনে হয়েছিল, অনুবাদ করার দেরির জন্য একজন বিধবার প্রাণ গেলেও সেটা তার দায়। ১৮৩০ সালের মাঝে বোম্বে ও মাদ্রাজেও আইনের হাত প্রসারিত হয়। বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার কয়েক হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বী পিটিশন করেন এই আইনের বিরুদ্ধে। তাদের মতে, ইংরেজ সরকার তাদের ধর্মীয় বিষয়ে নাক গলাবার চেষ্টা করছে। ব্যাপারটা লন্ডনের প্রিভি কাউন্সিল পর্যন্ত গড়ালে রামমোহন রায় উল্টো আইনের পক্ষে পিটিশন করেন। প্রিভি কাউন্সিল আইনের পক্ষে মত দেয়। এরপর প্রখ্যাত সাহিত্যিক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তার লেখনীর মাধ্যমে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীদের বিধবা বিবাহ প্রথা চালুর আন্দোলন করেন। ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ জুলাই ব্রিটিশ শাসন আমলে ভারতবর্ষের তৎকালীন গর্ভনর জেনারেল লর্ড ডালহৌসির সহায়তায় ভারতবর্ষের সকল বিচার ব্যবস্থায় হিন্দু বিধবাদের বিবাহ বৈধ করা হয়। পরবর্তীতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায় তৎকালীন বড় লাট লর্ড ক্যানিং অইন (দ্য হিন্দু উইডো’স রিম্যারেজ অ্যাক্ট) প্রনয়ন করে বিধবা বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেয়া হয়।

তখনও ভারতের সব অঞ্চল সতীদাহ বিরোধী আইন করেনি। ভারতে পুরোপুরি সতীদাহ আইন করে বন্ধ করতে ১৮৬১ সাল পর্যন্ত লেগে যায়। মেবার অনেক দিন পর্যন্ত প্রথা টিকিয়ে রেখেছিল। কিন্তু জনগণের মাঝে সতীদাহ বিরোধী সচেতনতা তখন তুঙ্গে। মহারাণা স্বরূপ সিং মারা গেলে তার কোনো স্ত্রীই তার সাথে সহমরণে যেতে রাজি হয়নি।

প্রত্যন্ত অঞ্চলের দিকে আইন জারি করে সতীদাহ বন্ধ করা যায়নি। লুকিয়ে সতীদাহ চলছিলই। প্রথা যখন সামাজিক নিন্দার শিকার হতে শুরু করে, তখন ধীরে ধীরে ভারত থেকে সতীদাহের মতো শতবর্ষের কুপ্রথা একেবারে বিলুপ্ত হয়।

to join the global Sanatani Hindu Community
Connect with Sanatani Hindus from all over the world — share, learn, and grow together.
Explore Questions, Bhajan Lyrics, Leelas, Feeds, Business Pages, Products, plus Shlokas, Events, Courses, Jobs, Marriage, Help Posts, and more.
মন্তব্য করতে Login অথবা Registration করুন