ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়ছেন সুনামগঞ্জের স্বপ্না আচার্য্য, সন্তানদের জন্য বাঁচতে চান এক অসহায় মা

1 day ago
VIEWS: 47

HindusNews ডেস্ক :

সাধারণ এক গৃহবধূ থেকে সন্তানদের ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুকে নিয়ে সংসারের খুঁটিনাটি সামলে চলা— সুনামগঞ্জ পৌরশহরের পশ্চিম তেঘরিয়া এলাকার স্বপ্না আচার্য্যর জীবন ছিল ঠিক এমনই। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম আঘাতে আজ তিনি মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। মরণব্যাধি ক্যানসার গ্রাস করেছে তাঁর সুস্থ স্বাভাবিক জীবনকে। চিকিৎসাব্যয় বহনের সামর্থ্য না থাকায় এখন জীবনযুদ্ধের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছেন তিনি ও তাঁর পরিবার।

স্বপ্নার জীবনযুদ্ধে শুরুর দিনটি ছিল সাধারণ। গলায় সামান্য ব্যথা অনুভব করা, খাবার খেতে অস্বস্তি হওয়া কিংবা কথা বলতে গিয়ে যন্ত্রণা— শুরুতে তিনি ভাবেন খাবারের সঙ্গে কোনো কাঁটা লেগে গেছে, সময় হলে সেরে যাবে। কিন্তু ব্যথা বাড়তেই থাকে। বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে দৌড়াদৌড়ির পরও কোনো সন্তোষজনক ফল না আসায় পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে বায়োপসি রিপোর্টে জানা যায়, গলার ডান পাশে ক্যানসার বাসা বেঁধেছে।

ময়মনসিংহ মেডিকেলের নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মো. আখতার-উজ-জামান আকন্দ জানান, স্বপ্নার ক্যানসারটি দীর্ঘদিন সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় বেশ দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে গেছে। ঢাকায় পাঠানো টিস্যু পরীক্ষার রিপোর্টেও বিষয়টি নিশ্চিত হয়। বর্তমানে তাঁর কেমোথেরাপি চলছে, তবে চিকিৎসাটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং দীর্ঘমেয়াদি।

এদিকে স্বপ্নার স্বামী নেপাল আচার্য্য— পেশায় পান বিক্রেতা। শহরের পুরাতন বাসস্টেশনের একটি টিনের দোকানে পান বিক্রি করেই পাঁচজনের সংসার চালান তিনি। প্রতিদিনের আয় দিয়ে সংসারই চলে কষ্টে। সেখানে সাত থেকে আট লাখ টাকার চিকিৎসার খরচ জোগাড় করা তাঁর পক্ষে অসম্ভব।

অসহায় কণ্ঠে তিনি বলেন—
“স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য প্রায় সাত লক্ষ টাকার প্রয়োজন। পান বিক্রি করে পরিবারই ঠিকমতো চলে না, সেখানে এত টাকা কোথায় পাব? যদি সবাই একটু সাহায্য করতেন, তাহলে হয়তো স্ত্রীকে বাঁচাতে পারতাম।”

স্বপ্না আচার্য্য তিন মেয়ে ও এক ছেলের মা। দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে, ছোট মেয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে, আর ছেলে বাবার দোকানে সময় কাটায়। সন্তানদের কথা উঠতেই চোখ ভিজে ওঠে স্বপ্নার।
তিনি বলেন—
“আমি বাঁচতে চাই শুধু ওদের জন্য। ছোট মেয়েটা আর ছেলেকে বড় হতে দেখতে চাই।”

স্বপ্নার শাশুড়ি মালতি আচার্য্যও অসহায়তার কথা জানিয়ে বলেন,
“টাকাপয়সার অভাবে ঠিকমতো চিকিৎসা করাতে পারছি না। আমার ছেলে পাগলের মতো চেষ্টা করছে। সবাই যদি একটু সাহায্য করে, তাহলে আমার বউটার চিকিৎসা হবে।”

প্রতিবেশীরাও জানান, পরিবারটি এখন সম্পূর্ণ অসহায়। চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে না পারলে স্বপ্নার জীবনের আলোর শিখা নিভে যেতে পারে যে কোনো সময়।

একজন মা নিজের জন্য নয়, সন্তানদের মুখের হাসি বাঁচিয়ে রাখতে বাঁচতে চান— তাঁর এই আর্তি সমাজের প্রতিটি মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। সামান্য সহমর্মিতা ও সাহায্য স্বপ্নার জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারে নতুন আশার আলো।

মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দিলে হয়তো একটি পরিবার আবার নতুন করে বাঁচার শক্তি পাবে।

to join the global Sanatani Hindu Community
Connect with Sanatani Hindus from all over the world — share, learn, and grow together.
Explore Questions, Bhajan Lyrics, Leelas, Feeds, Business Pages, Products, plus Shlokas, Events, Courses, Jobs, Marriage, Help Posts, and more.
মন্তব্য করতে Login অথবা Registration করুন