হিন্দু ধর্মসহ পাঁচ বিষয়ের শিক্ষকদের দশম গ্রেডে বেতন, বাকিদের ক্ষোভ—নতুন এমপিও নীতিমালা নিয়ে বিতর্ক

16h ago
VIEWS: 205

HindusNews ডেস্ক :

দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষক সমাজে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদ্য ঘোষিত নতুন এমপিও নীতিমালা। নীতিমালাটি প্রকাশের পরপরই জানা যায়, মাধ্যমিক স্তরে হিন্দু ধর্ম, কৃষি, শারীরিক শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান—এই পাঁচ বিষয়ের শিক্ষকরা বিএড ডিগ্রি ছাড়াই সরাসরি ১০ম গ্রেডে বেতন-ভাতা পাবেন। অথচ একই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অন্যান্য বিষয়ের শিক্ষকরা বিএড ছাড়া ১১তম গ্রেডেই সীমাবদ্ধ থাকবেন। বিষয়টি শিক্ষক সমাজের এক বড় অংশের কাছে স্পষ্ট বৈষম্য হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ রোববার (৭ ডিসেম্বর) প্রজ্ঞাপন জারি করে নতুন নীতিমালা প্রকাশ করলে শিক্ষক মহলে শুরু হয় নানা প্রতিক্রিয়া। নীতিমালার ধারা-বিবরণী বিশ্লেষণ করে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এমপিওভুক্ত শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতা, একাডেমিক দক্ষতা ও প্রশিক্ষণকে গুরুত্ব দেওয়া হলেও এবার বিষয়ভিত্তিক গ্রেডে এ ধরনের পার্থক্য তৈরি করা শিক্ষক সমাজে অসন্তোষ বাড়িয়েছে।

অনেক শিক্ষক জানিয়েছেন, একই প্রতিষ্ঠানে একই স্নাতক যোগ্যতা নিয়ে যোগদান করলেও বিষয়ভেদে বেতন-গ্রেড ভিন্ন হওয়া কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। একজন বাংলা বিষয়ের শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে যোগদান করলে শিক্ষক ১০ম গ্রেডে যাবেন, অথচ বাংলা বা ইংরেজিতে স্নাতক হলে তিনি থাকবেন ১১তম গ্রেডে—এটি কোনোভাবেই ন্যায্য হতে পারে না। একইভাবে ইসলাম শিক্ষা বিষয়েও বিএড ছাড়া ১১তম গ্রেড রাখা হলেও হিন্দু ধর্ম বিষয়ে ১০ম গ্রেড দেওয়া হয়েছে, যা অনেকের চোখে নীতিগত অসংগতির উদাহরণ হিসেবে ধরা পড়েছে।

অন্যদিকে গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষকরা একদিকে ১০ম গ্রেডের সুবিধা পেলেও সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাঁদের মতে, বেতন বাড়ালেও ক্যারিয়ার উন্নয়ন সীমিত করে দেওয়া কোনোভাবেই ইতিবাচক পদক্ষেপ নয়। বরং এতে দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষকতার পেশায় নিরুৎসাহ সৃষ্টি হতে পারে।

শিক্ষকদের বেশিরভাগই মনে করছেন, এমপিও নীতিমালা প্রণয়নে বিষয়ভিত্তিক পার্থক্যের বদলে শিক্ষকতার যোগ্যতা, পেশাগত প্রশিক্ষণ, অভিজ্ঞতা ও অবদানকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল। বিদ্যমান নিয়মে শিক্ষকদের মধ্যে অযথা বৈষম্য সৃষ্টি হবে বলে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সবার অভিমত, একই মানদণ্ডে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের বেতন-ভাতা নির্ধারণে এ ধরনের পার্থক্য শিক্ষাঙ্গনে বিভাজন তৈরি করবে এবং শিক্ষার মানের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বঞ্চিত শিক্ষকরা নীতিমালার দ্রুত সংস্কার দাবি করেছেন। তাঁদের মতে, বিষয়ভিত্তিক গ্রেড বিভাজন অব্যাহত থাকলে শিক্ষক সমাজে অসন্তোষ বাড়বে এবং কর্মক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা কমে যাবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। তবে শিক্ষকরা আশা করছেন, বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শিগগিরই এ নীতিমালা পুনর্বিবেচনার উদ্যোগ নেবে।

তথ্যসূত্র:
দৈনিক শিক্ষাডটকম

to join the global Sanatani Hindu Community
Connect with Sanatani Hindus from all over the world — share, learn, and grow together.
Explore Questions, Bhajan Lyrics, Leelas, Feeds, Business Pages, Products, plus Shlokas, Events, Courses, Jobs, Marriage, Help Posts, and more.
মন্তব্য করতে Login অথবা Registration করুন