
'সংখ্যালঘু বলে কি ১৩ বছরেও বিচার পাইমু না?’— বিশ্বজিত হত্যার পরিবারে আক্ষেপ
HindusNews ডেস্ক :
পুরোনো ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা করা দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎ দাসের হত্যাকাণ্ডের ১৩ বছর পার হলেও রায় এখনও কার্যকর হয়নি। বারবার সরকার পরিবর্তন হলেও বিচার না হওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভে ভেঙে পড়েছেন নিহতের পরিবার।
বিশ্বজিতের বাবা অনন্ত দাস বলেন, “আমরা সংখ্যালঘু বলেই কি ১৩ বছরেও বিচার পাইমু না? আগের সরকার বিচার শেষ করে নাই, এই সরকারও করলো না। সবাই দেখছে, সবার সামনেই আমার ছেলেটারে কুপাইয়া মাইরা ফেললো। আসামিরা আপিল করে ছাড়া পাইয়া যায়—তাহলে বিচার হইলো কই?”
বিশ্বজিতের বড় ভাই উত্তম দাস জানান, তাদের একটাই দাবি—দ্রুত বিচার। তিনি বলেন, “ভাই তো আর ফেরত আসবে না। আমরা আগে ভাবতাম সরকার পরিবর্তন হইলে বিচার পাইমু, কিন্তু দেড় বছর হয়ে গেল কোনও খবর নেই। আগের সরকার করলো না, এই সরকারও করছে না। তারপরও চাই দ্রুত বিচার হোক।”
২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের অবরোধ চলাকালে বিশ্বজিতকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তার শাঁখারি বাজারের ছোট দর্জির দোকান ছিল। ঘটনার সময় তিনি বড় ভাইয়ের সঙ্গে লক্ষ্মীবাজারে ছিলেন।
মামলায় প্রথমে ২৫ জনকে আসামি করা হয়। ২০১৩ সালে নিম্ন আদালত ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। পরে হাইকোর্টে শুনানির পর দুজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল, চারজনকে যাবজ্জীবন এবং দুজনকে খালাস দেওয়া হয়। যাবজ্জীবন প্রাপ্ত ১৩ আসামির মধ্যে দুজন আপিলে খালাস পান। বর্তমানে মামলাটি আপিলে বিচারাধীন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী বলেন, “শুধু বিশ্বজিত হত্যা মামলা নয়, অনেক আলোচিত হত্যাকাণ্ডের রায় দীর্ঘ সময় ধরে কার্যকর হয়নি। সরকার চাঞ্চল্যকর মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিয়েছে এবং আশা করা যায়, এসব মামলা আপিল বিভাগের মাধ্যমে দ্রুত শেষ হবে।”
১৩ বছর পার হলেও বিশ্বজিতের পরিবার একটুখানি ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের প্রশ্ন স্পষ্ট—“আমরা সংখ্যালঘু বলে কি বিচার পাইমু না?”