
১৯৭১ সালের বিজয় উদযাপনে আসামে বিশেষ এয়ার শো, উপস্থিত বাংলাদেশি প্রতিনিধি দল
HindusNews আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের ৫৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে এক বিশেষ এয়ার শোর আয়োজন করেছে ভারতীয় বিমানবাহিনী। বুধবার সকালে ডিব্রুগড় জেলার মোহানবারি বিমানঘাঁটিতে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত নানা আকর্ষণীয় উড্ডয়ন প্রদর্শনী চলতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে নতুনভাবে মনে করিয়ে দেওয়া এই অনুষ্ঠানে ভারতীয় বিমানবাহিনীর আধুনিক যুদ্ধবিমান, পরিবহন বিমান ও হেলিকপ্টারের মনোমুগ্ধকর কৌশলী উড্ডয়ন উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে।
এয়ার শোতে এসইউ–৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান, ডর্নিয়ার ডো–২২৮ নজরদারি বিমান, আন্তোনভ এএন–৩২ পরিবহন বিমান, শক্তিশালী চিনুক হেলিকপ্টার এবং বহুমুখী এমআই–১৭ হেলিকপ্টার অংশ নেয়। সবুজে ঘেরা ডিব্রুগড়ের আকাশে এসব বিমানের প্রদর্শনী ভারতীয় বিমানবাহিনীর সক্ষমতা, পেশাদারিত্ব ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিকে তুলে ধরে। পুরো আয়োজনটির দায়িত্বে ছিল ভারতীয় বিমানবাহিনীর ইস্টার্ন এয়ার কমান্ড, যারা ১৯৭১ সালের যুদ্ধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
অনুষ্ঠানে সামরিক ও বেসামরিক বিশিষ্ট অতিথিদের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও একটি ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিল। দলের মধ্যে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া আটজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দুই কর্মরত কর্মকর্তা। মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর অবদান স্মরণে আয়োজিত এই সফরে দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের উষ্ণতা আরও স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।
এয়ার শোর পাশাপাশি সেখানে ছিল ১৯৭১ সালের যুদ্ধের স্মৃতি নিয়ে বিশেষ প্রদর্শনী এবং ওই যুদ্ধকে কেন্দ্র করে নির্মিত একটি চলচ্চিত্রের প্রিমিয়ার। অনুষ্ঠানে ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অমর প্রীত সিং উপস্থিত থাকলেও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং শেষ মুহূর্তে সফরসূচি পরিবর্তন করায় যোগ দিতে পারেননি।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ইস্টার্ন এয়ার কমান্ড মোহানবারিসহ পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন ঘাঁটি থেকে একের পর এক বিমান অভিযান পরিচালনা করে আকাশে সম্পূর্ণ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিল। এসব অভিযান স্থলযুদ্ধে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ বাহিনীর অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করে। যুদ্ধটি মাত্র তেরো দিনে শেষ হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ। সেই বিজয়ের স্মৃতিকে সম্মান জানাতেই ভারতের এই বিশেষ আয়োজন নতুন করে তুলে ধরেছে ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়।