
মোল্লাহাটে সংখ্যালঘু পরিবারের জমি দখল ও হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
বাগেরহাট প্রতিনিধি :
বাগেরহাটের মোল্লাহাটে সংখ্যালঘু এক হিন্দু পরিবারের ওপর চলমান জমি দখল, লুটপাট ও হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বিকেল চারটায় উপজেলার আটজুড়ী ইউনিয়নের দত্তডাঙ্গা আশ্রম সংলগ্ন এলাকায় এ মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবারসহ স্থানীয় শতাধিক মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পঙ্কজ মণ্ডল (৭০) ও তাঁর স্ত্রী বাসন্তী মণ্ডল (৬২) অভিযোগ করে জানান, গত কয়েক মাস ধরে একটি প্রভাবশালী চক্র তাদের পৈত্রিক জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ৫ আগস্ট রাতের অন্ধকারে প্রায় ৪০–৫০ জনের একটি দল তাদের জমি দখল করে ঘরে হামলা চালায় এবং মালপত্র লুট করে বলে অভিযোগ করেন তারা। ঘটনার পর দখলকৃত স্থানে একটি টিনের ঘর তুলে স্থায়ীভাবে দখল নেওয়ারও চেষ্টা চলছে বলে দাবি পরিবারের।
সর্বশেষ ৭ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে ঘটনার অবনতি ঘটে। ওই দিন আজাদ খান, জাকির শিকদার ও রুবেল শিকদার তাঁদের জমির গাছ কাটতে গেলে পঙ্কজ মণ্ডল ও বাসন্তী মণ্ডল তা প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পঙ্কজ মণ্ডলকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয় এবং বাসন্তী মণ্ডলকে কুড়াল দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে মোল্লাহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
পঙ্কজ মণ্ডল বলেন, কাহালপুর মৌজার ৪৩৬৫ নং দাগে তাদের পূর্বপুরুষের ভোগদখলকৃত জমি একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে আত্মসাতের পরিকল্পনা করছে। তিনি আরও জানান, হামলার সময় তাঁদের ধর্মীয় পরিচিতিকে কটাক্ষ করে অপমানজনক গালি ও প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে আরজুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ দুলাল মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন, ৪নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর মোল্লা সহ উপস্থিত বক্তারা বলেন, অভিযুক্ত চক্রটি বহুদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। স্থানীয় সালিশ, প্রশাসনের প্রচেষ্টা, এমনকি সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায়ও পরিস্থিতি নিরসন না হওয়ায় এলাকাবাসী গুরুতর উদ্বেগে রয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, সংখ্যালঘু পরিবারটি চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছে। দ্রুত দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং পুনরায় জমির দখল ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেন তারা।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা জানান, ধর্মীয় সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে পরিবারটি সহজ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। তারা আশা প্রকাশ করেন—আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন অবিলম্বে জোরালো ব্যবস্থা নেবে, যাতে এ ধরনের নির্যাতন ও দখলচেষ্টা বন্ধ হয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার নিরাপদে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।