
জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা না হলে ভোট বর্জনের হুমকি হিন্দু মহাজোটের
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা | তারিখ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
সারাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, জমি দখল ও হত্যার প্রতিবাদে এবং জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট। দাবি আদায় না হলে আগামীতে হিন্দু সম্প্রদায় ভোট বর্জনের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
আজ শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে এই দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে বক্তারা রংপুরের তারাগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ চন্দ্র রায় ও তাঁর স্ত্রী সুবর্ণা রাণী রায়, মৎস্য ব্যবসায়ী উৎপল সরকার এবং স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রানোতোষ কর্মকারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান। তারা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
হিন্দু মহাজোটের নেতারা অভিযোগ করেন, বিগত ১৭ বছরে শেখ হাসিনার সরকার পরিকল্পিতভাবে হিন্দু শূন্য করার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে। তবে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর হিন্দু সম্প্রদায় স্বস্তির আশা করলেও তা নিরাশায় পরিণত হয়েছে।
বক্তারা বলেন, "সংবিধান ও নির্বাচন সংস্কারসহ একাধিক সংস্কার কমিটি গঠন করা হলেও সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের কোনো প্রতিনিধিত্ব রাখা হয়নি, এমনকি তাদের মতামতও নেওয়া হয়নি। বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদেও হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ নেই। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো আগামী সংসদকে ইচ্ছাকৃতভাবে হিন্দু শূন্য রাখার পরিকল্পনা করছে।"
সংগঠনটির মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, "হিন্দু সম্প্রদায় বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, জাতীয় সংসদসহ সর্বক্ষেত্রে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য সংরক্ষিত আসন ও পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। অন্যথায় হিন্দু সম্প্রদায় আসন্ন নির্বাচন ও ভোট বর্জনের কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে।"
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি অ্যাডভোকেট দীনবন্ধু রায়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রদীপ কুমার পাল, প্রধান সমন্বয়কারী বিজয় কৃষ্ণ ভট্টাচার্য, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. হেমন্ত দাস, নকুল কুমার মন্ডল, সাংগঠনিক সম্পাদক কিশোর বর্মন, হিন্দু যুব মহাজোটের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি মধু, ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সজিব কুন্ডুসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।