
কুমিল্লায় ক্ষমতার দাপট: এক মাস সংসারের পর স্বামীর কাছ থেকে জোরপূর্বক স্ত্রীকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, কুমিল্লা |
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার তলা গ্রামের দাস বাড়িতে এক চাঞ্চল্যকর ও হৃদয়বিদারক ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিয়ের এক মাস সংসার করার পর, মেয়ের অমত থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তাকে স্বামীর কাছ থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বাবার বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মেয়েটি তার স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে চেয়ে কান্নাকাটি করে এবং একপর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। কিন্তু তার আর্তনাদ উপেক্ষা করে বাবার বাড়ির লোকজন তাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। অভিযোগ উঠেছে, এই ঘটনায় পুলিশের সামনেই পেশিশক্তি ও অর্থের দাপট দেখানো হয়েছে।
ক্ষমতার অপব্যবহার ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, মেয়ের জ্যাঠাতো ভাই দীপ্ত দাস পুলিশ বিভাগে কর্মরত। তিনি তার পদের প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় থানায় চাপ সৃষ্টি করেন। অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের উপস্থিতিতেই ছেলের পরিবারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও অপমান করা হয় এবং টাকার বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এছাড়া বহিরাগত ও নেশাখোরদের ভাড়া করে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগও পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত যারা
স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রীকে জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন—মেয়ের বাবা উত্তম দাস, মা সীমা দাস, মামা উজ্জ্বল দত্ত ও সজল দত্ত, মাসি গৌরী দত্ত এবং পুলিশ সদস্য জ্যাঠাতো ভাই দীপ্ত দাস।
এলাকাবাসীর ক্ষোভ
এই ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানান, ছেলে ও মেয়ে একই সম্প্রদায়ের (সনাতনী) এবং ভালো পরিবারের। ধর্মীয় রীতি মেনেই তাদের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, "নিজেদের মেয়ের সুখের চেয়ে কি বংশমযার্দা বা ক্ষমতা বড় হয়ে গেল? মেয়েটি অন্য ধর্মের ছেলের সাথে পালিয়ে গেলে কি তারা এমন আগ্রাসী ভূমিকা নিতেন?"
বর্তমান পরিস্থিতি
বর্তমানে মেয়েটিকে তার পরিবারের জিম্মায় জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, স্ত্রীকে হারিয়ে ছেলেটি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় সনাতনী সমাজ ও এলাকাবাসী অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ক্ষমতার অপব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
[বি:দ্র: প্রতিবেদনটি অভিযোগকারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি।]