
সংসদে সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব: বাংলাদেশে সংরক্ষিত আসন শূন্য, পাকিস্তানে বরাদ্দ ১০!
HindusNews ডেস্ক :
দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশ বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। ভৌগোলিক ও ঐতিহাসিক যোগসূত্র থাকলেও আইনসভায় ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকরণের কাঠামোতে দুই দেশের চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। বাংলাদেশে জাতীয় সংসদে সংখ্যালঘুদের জন্য আলাদা কোনো সংরক্ষিত আসন না থাকলেও, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন বরাদ্দ রয়েছে।
বাংলাদেশের চিত্র: সংরক্ষিত আসন শূন্য
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে মোট আসন সংখ্যা ৩৫০। এর মধ্যে ৩০০টি আসনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হন এবং বাকি ৫০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। বর্তমান সংবিধান ও আইন অনুযায়ী, ধর্মীয় বা জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য সংসদে আলাদা কোনো সংরক্ষিত আসন নেই।
সবশেষ ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে ১৪ জন এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। তবে তাঁরা প্রত্যেকেই সাধারণ আসনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়েছেন, কোনো সংরক্ষিত কোটায় নয়। বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটসহ বিভিন্ন সংখ্যালঘু সংগঠন দীর্ঘ দিন ধরে সংসদে তাদের প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করতে সংরক্ষিত আসনের দাবি জানিয়ে আসছে। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আইন বা বিল পাস হয়নি। ফলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা এখনো ০ (শূন্য)।
পাকিস্তানের চিত্র: সংখ্যালঘুদের জন্য ১০ আসন
অন্যদিকে, পাকিস্তানের পার্লামেন্টারি কাঠামোতে সংখ্যালঘুদের জন্য সাংবিধানিকভাবে আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের (National Assembly) মোট আসন সংখ্যা ৩৩৬। এর মধ্যে সাধারণ আসন ও নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের পাশাপাশি ১০টি আসন শুধুমাত্র অ-মুসলিম বা ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।
দেশটির নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, জাতীয় সংসদ ছাড়াও পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রাদেশিক পরিষদগুলোতেও (Provincial Assemblies) সংখ্যালঘুদের জন্য আসন সংরক্ষিত থাকে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে আইনসভায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে।
তুলনামূলক পরিসংখ্যান
বিশ্লেষণে দেখা যায়, পাকিস্তানের জাতীয় সংসদে যেখানে সংখ্যালঘুদের জন্য সুনির্দিষ্ট ১০টি আসন রয়েছে, সেখানে বাংলাদেশে এই সংখ্যা শূন্য। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা সাধারণ আসনে রাজনৈতিক দলের মনোনয়নে নির্বাচিত হয়ে সংসদে এলেও, প্রাতিষ্ঠানিক কোটা বা সংরক্ষিত কোনো ব্যবস্থা বর্তমানে কার্যকর নেই।