
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে রাতের আঁধারে কালীমন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর, হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ
দীপঙ্কর বর্মণ,নিজস্ব প্রতিবেদক:
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় রাতের আঁধারে একটি কালীমন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার দিগর ইউনিয়নের গারটিয়া এলাকায় অবস্থিত গারটিয়া কালীবাড়ি মন্দিরে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা এই হামলা চালায়। এ ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গারটিয়া কালীবাড়ি মন্দিরের কালী প্রতিমাটি চলতি বছরের জ্যৈষ্ঠ মাসে পূজা শেষে বিসর্জন না দিয়ে মন্দির প্রাঙ্গণেই সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা মন্দিরে প্রবেশ করে প্রতিমার চারটি হাতসহ বিভিন্ন অংশ ভেঙে ফেলে। বুধবার সকালে মন্দিরে নিয়মিত পূজা ও দেখভালের জন্য আসা স্থানীয়রা প্রতিমার ভাঙা অংশ দেখতে পেয়ে হতবাক হয়ে পড়েন।
গারটিয়া কালীবাড়ির সাধারণ সম্পাদক কার্তিক দত্ত জানান, সকালে মন্দিরে গিয়ে তারা প্রতিমার একাধিক হাত ও অন্যান্য অংশ ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে মন্দির পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়। তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা ধর্মীয় অনুভূতিতে গভীর আঘাত হানে এবং শান্তিপূর্ণ এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবু সাঈদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, গোপালপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিব খানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও মন্দিরে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে শাস্তির দাবি জানান।
ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখছেদুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কে বা কারা কালী প্রতিমার কয়েকটি হাত ভেঙে ফেলেছে—তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহের পাশাপাশি আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এ ঘটনায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং মন্দিরসহ সংখ্যালঘু উপাসনালয়গুলোর নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানানো হয়েছে।